-->

বিএসএমএমইউতে গোপনে নিয়োগের তৎপরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএসএমএমইউতে গোপনে নিয়োগের তৎপরতা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গোপনে নিয়োগ দেওয়ার তৎপরতা চালানো অভিযোগ উঠেছে। এর আগে একই পদে আরেককটি নিয়োগ নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। সেই মামলা নিস্পত্তির আগেই গোপনে আবার নিয়োগ প্রকৃয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

 

জানা গেছে- ২০২২ সালে ৫ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রায় একবছর পর গোপনে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চারজনের মৌখিক পরীক্ষাও নেওয়া হয়েছে। সাতজন প্রার্থীর মধ্যে চারজন প্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। একজনকে নেওয়া কথা থাকলেও দুইজনকে নেওয়া প্রকৃয়া চলছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী।

 

একজন প্রার্থী অভিযোগ করেছেন, গোপণে নিয়োগ সম্পন্ন করার জন্য সম্প্রতি তারা মৌখিক পরীক্ষা নেয়। সাতজন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনজন মূলত পরীক্ষা দিতে আসছিলেন। অপরজন আসছিলেন পরীক্ষা কবে হবে সেই খোঁজ খবর নিতে। কিন্তু এসেই দেখলেন পরীক্ষা চলছে। তখন তিনি হইচই করলে তারও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।

 

একজন প্রার্থী বলেন, ১ জুন সকাল ১০ টার দিকে তাকে ফোন করে পরীক্ষা দিতে আসতে বলা হয়। তিনি বলেন, এটা কোনো সিস্টেম হতে পারে না। মূলত আমরা যাতে অংশ নিতে না পারি সেজন্য কর্তৃপক্ষ এই কাজ করেছে। তারা মূলত তাদের পছন্দের প্রার্থী নিতে চাচ্ছেন। না হলে সকাল ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারীকে দিয়ে ফোন করিয়ে ১ টায় পরীক্ষা দিতে আসতে বলতে পারে না। এটা কোনো অফিসয়িাল সিস্টেম নয়। অন্তত এক সপ্তাহ আগে চিঠি দেওয়া উচিত। কিন্তু তা তারা করেনি। তারা আমাদের নামে ২৯ মে তারিখ মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে একটি অফিস আদেশ রেডি করেও রাখে। কিন্ত তা আমাদের পাঠায়নি। 

 

তিনি বলেন, চিঠিতে ১ জুন দুপুর ১ টা ২০ মিনিটে ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শূন্য পদে মৌখিক পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করে। তাতে তারিখ স্থান ও সময় রয়েছে। আমাকে চিঠি দেয়নি। অন্যরা পেয়েছেন কিনা জানি না। 

 

সেই চিঠির একটি কপি এসেছে এ প্রতিবেদকের কাছে, তাতে গত ২৯ মে বিএসএমএমইউর অতিরিক্তি রেজিস্ট্রার-০১ এই অফিস আদেশে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন।

 

ওই প্রাথী বলেন, আমাদের চিঠি না দিলেও আগে থেকে আমরা জানতে পারি ১ জুন দুপুরে পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু  আগে রাতে শুরু হয় নাটকীয়তা। পরীক্ষা হবে না বলে গত ৩১ মে রাত ১০ টার দিকে ঘোষণা দেওয়া হয়। আবার ১ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে ফোন করে প্রবেশপত্র নিতে বলা হয়। জানানো হয়- দুপুর ১ টা ২০ মিনিটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

 

মৌখিক পরীক্ষয় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে গত ২৯ মে বিএসএমএমইউর অতিরিক্তি রেজিস্টার ১ স্বাক্ষরিত প্রার্থীদের দেওয়া অফিস আদেশে বলা হয়েছে- ‘স্মারক নং-বিএসএমএমইউ/২০২২/৫৫২৮, তারিখ ০২/০৬/২০২২ইং মোতাবেক বিজ্ঞপ্তির আলোকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শূন্য পদে নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সাক্ষাৎকার আগামী ০১/০৬/২০২৩খ্রি: তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার সময় ০১:২০ ঘটিকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের কনফারেন্স রুম, ব্লক-বি, ২য় তলা, ১২৭ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।’

 

‘নির্বাচনী বোর্ডে (সকল মূল সনদপত্র, মার্কসীট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্রসহ) উপস্থিত হওয়ার জন্য আপনাকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হ'ল।’

 

‘এই সাক্ষাৎকার উপলক্ষ্যে কোন ভ্রমণ ভাতা অথবা দৈনিক ভাতা প্রদান করা হবেনা।’

 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউর ডেপুটি রেজিস্ট্রার ডা. সাদিক বলেন, পরীক্ষা বিষয়ে তিনি অবগত নন।

 

রাতে পরীক্ষা হবে না ঘোষণা দেওয়ার পর সকালে কয়েকজনকে ফোন করে পরীক্ষা হবে জানিয়ে প্রবেশপত্র নিতে বলা হয়েছে কিনা এমন বিষয়ে ডা. সাদিক বলেন, তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version