-->
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের কর্মশালায় বক্তারা

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুর্বলতা রয়ে গেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুর্বলতা রয়ে গেছে

দেশে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে এখনো কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। এগুলো দূর করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি’র আলোকে আইনটিকে সংশোধন করা প্রয়োজন।

 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন: গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

 

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড রিসার্চের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।

 

তিনি বলেন, বিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ছয়টির সাথেই তামাক জড়িত। তামাকের এই সর্বগ্রাসী ক্ষতি প্রতিরোধে ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকার জনস্বাস্থ্যের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ প্রণয়ন করে।

 

২০১৩ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনে। তারপরও আইনটিতে বেশকিছু দুর্বলতা রয়েছে গেছে। তাই দ্রুত আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সাংবাদিক অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন।

 

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান।

 

তিনি বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি এবং অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে।

 

যতো দ্রুত আইনটি সংশোধন করা হবে ততো বেশি মানুষের জীবন বাাঁচানো সম্ভব হবে।

 

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ তামাকবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ছয়টি দুর্বলতা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এগুলো সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো- সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা;

 

তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যে কোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেটের মতো ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা।

 

এদিকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ১৭ জন সাংবাদিককে এনসিডি (নন-কমিউনিকেবল ডিজিস) মিডিয়া ফেলোশিপ আওয়ার্ড ২০২২ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ১১ জন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, তিনজন করে অনলাইন ও টিভিতে কর্মরত।

 

বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন।

 

এ সময় তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সরকারকে অবশ্যই জনস্বাস্থ্যকে অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে। তা না হলে এসডিজি-গোল পূরণ করা সম্ভব হবে না। এ জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা জোরালো ভূমিকা রাখতে পারেন।

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) অধ্যাপক ডা, ইউনুছুর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফজিলাতুন নেসা মালিক, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মো. রাশেদ রাব্বি, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স বাংলাদেশের ম্যানেজার (অ্যাডভোকেসি) আতাউর রহমান মাসুদ প্রমুখ।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version