-->

পাঁচ মহাদেশের পাঁচ শতাধিক বক্তা অংশ নেবেন ঢাকা লিট ফেস্টে

নিজস্ব প্রতিবেদক
পাঁচ মহাদেশের পাঁচ শতাধিক বক্তা অংশ নেবেন ঢাকা লিট ফেস্টে

কোভিড মহামারির কারণে তিন বছর স্থগিত থাকার পর আবারো ঢাকায় বসছে দেশি-বিদেশি সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ, লেখকদের মেলা। আগামী ৫ থেকে ৮ জানুয়ারি, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাহিত্যের সবচেয়ে বড় আসর ঢাকা লিট ফেস্টের দশম আয়োজন।

 

এতে অংশ নেবেন পাঁচ মহাদেশের পাঁচ শতাধিক বক্তা। চার দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের তত্ত¡াবধানে আছেন এর তিন পরিচালক সাদাফ সায, আহসান আকবার এবং ড. কাজী আনিস আহমেদ। গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিট ফেস্টের অন্যতম সহপরিচালক সাদাফ সায জানান, অনেক আনন্দের এবং গর্বের একটি আয়োজন ঢাকা লিট ফেস্ট। আমাদের গর্বের বিষয় যে বিশ্বের বড় মাপের লেখকরা আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবার। সাদাফ জানান, দশম আয়োজনে থাকছেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী লেখক ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত বিভিন্ন পুরস্কার বিজয়ী বক্তারা।

 

যার মধ্যে আছেন বুকার ও ইন্টারন্যাশনাল বুকার, নিউস্ট্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল, পেন/পিন্টার, প্রি মেডিচি, অস্কার অ্যাওয়ার্ড, উইন্ডহাম ক্যাম্পবেল পুরস্কার, অ্যালবার্ট মেডেল, ওয়াটারস্টোনস চিলড্রেনস বুক প্রাইজ, আগা খান অ্যাওয়ার্ডসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননাপ্রাপ্তরা।

 

তিনি বলেন, এ বছর লিট ফেস্টে অংশ নেবেন নোবেল বিজয়ী আব্দুলরাজাক গুরনাহ’র মতো বিখ্যাত ব্যক্তিরা। এছাড়া নুরুদ্দিন ফারাহ, অমিতাভ ঘোষ, হানিফ কুরেশী, পঙ্কজ মিশ্র, টিলডা সুইন্টন, জন লি এন্ডারসন, অঞ্জলি রউফ, সারাহ চার্চওয়েল, গীতাঞ্জলি শ্রী, ডেইজি রকওয়েল, গ্রন্থার ফ্রয়েড, অ্যালেকজান্দ্রা প্রিঙ্গেল, ডাইম সারাহ গিশ্বার্ট, মারিনা মাহাথির, জয় গোস্বামী, কামাল চৌধুরী, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, আনিসুল হক, মাসরুর আরেফিন, মারিনা তাবাসসুম, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ইমদাদুল হক মিলন, কায়সার হক, শাহীন আখতার, অমিতাভ রেজা এবং আজমেরী হক বাঁধনসহ আরো অনেকেই। চারদিনের এই উৎসবে ১৭৫টির বেশি সেশনে অংশ নিচ্ছেন পাঁচটি মহাদেশের ৫০০ এরও বেশি বক্তা, শিল্পী ও চিন্তাবিদ।

 

লিট ফেস্টের আরেক সহপরিচালক ড. কাজী আনিস আহমেদ বলেন, আমরা লিট ফেস্টকে দেখি ফেস্টিভ্যাল অব আইডিয়া হিসেবে। যদিও এখানে সাহিত্য একটি মুখ্য বিষয়। এবারের আয়োজনে আমরা চলচ্চিত্র নিয়েও আলাপ করবো। টিলডা সুইন্টন আসছেন, সঙ্গে আমরা আমাদের নির্মাতাদের রাখবো। ওটিটি নিয়ে অনেক আলাপ হচ্ছে। সেটা নিয়েও আমরা এখানে কথা বলবো।

 

তিনি বলেন, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আমরা বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করবো। এবার অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবক সারাহ গিলবার্ট আসছেন। এছাড়া আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর ভাষা উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। এই জায়গায় আরেকটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হচ্ছে আমরা দুই রোহিঙ্গা কবিকে নিয়ে আসছি। শিশুদের জন্য আমাদের অনেক উপস্থাপনা থাকছে।

 

আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি অনুষ্ঠানটিকে ঢাকাকেন্দ্রিক না রেখে ঢাকার বাইরে যেসব লেখক আছেন তারা আসতে পারছেন কিনা এবং নারী লেখকরা যথাযথ প্রতিনিধিত্ব পাচ্ছেন কিনা সেদিকে নজর রেখে পুরো আয়োজন সাজানো হয়েছে।

 

অপর সহপরিচালক আহসান আকবার বলেন, কোভিড মহামারির কারণে আমাদের আয়োজন তিন বছর হয়নি। মহামারির কথা মাথায় রেখে আমরা সারাহ গিলবার্টকে নিয়ে আসছি। এবার আমরা স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকগুলো আলোচনা রাখছি। আগামী দিনে মহামারি যেন না আসে সেজন্য আমরা কীভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি, আমাদের আরেকটা ভ্যাকসিন যেন না লাগে, সুস্থ থাকতে কী খাওয়া উচিত সেজন্য চিকিৎসক, শেফদের আমরা এই আয়োজনে যুক্ত করেছি।

 

ঢাকা লিট ফেস্টের টাইটেল স্পন্সর বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল বলেন, চার দিনব্যাপী ঢাকা লিট ফেস্ট অনেক বড় একটা আয়োজন। এই ধরনের বড় উৎসবে টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকা আমাদের জন্য গর্বের। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় এই আয়োজন সফল হবে বলে আমি আশা রাখছি।

 

সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ এই আয়োজনের আরেক স্পন্সর সিটি ব্যাংকের সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, ঢাকা লিট ফেস্ট আমাদের প্রাণের জায়গা। ২০১৫ সালের আমরা স্পন্সর করেছিলাম। ২০১৯ সালেও আমরা ছিলাম। আমরা আয়োজকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। যার কারণে আমি অনুরোধ করেছিলাম প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে সেশন রাখতে এবং তারা রেখেছেন।

 

 

আয়োজকরা জানান, চার দিনের এই আয়োজনে থাকবে কথোপকথনের একটি বৈচিত্র্যময় মিশ্রণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সেশন শিশু ও তরুণদের জন্য আকর্ষণীয় আয়োজন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাট্য, সঙ্গীত এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ঢাকা লিট ফেস্টের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউন। সেই সঙ্গে প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে আছে দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড এবং স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে থাকছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।

 

অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও সরাসরি টিকিটের লোকেশন জানতে লগইন করতে হবে www.dhakalitfest.com -এ। এবারের আয়োজনে প্রবেশের জন্য প্রয়োজন হবে টিকিটের। ২০০ এবং ৫০০ টাকায় টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। অনলাইনে এবং সশরীরে টিকিট কেনার সুযোগ থাকছে। ১২ বছরের কম বয়সী ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version