-->

বিনিয়োগকারীদের চোখ শীর্ষ বাজার মূলধনি কোম্পানির শেয়ারে

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ
বিনিয়োগকারীদের চোখ শীর্ষ বাজার মূলধনি কোম্পানির শেয়ারে

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: কিছুদিন আগেও পতনের বৃত্তে ঘুরছিল দেশের পুঁজিবাজার। তবে বাজেটের আগেই বাজারচিত্র কিছুটা পরিবর্তন হয়। ধারাবাহিক উত্থান না থাকলেও খুব বড় পতন দেখা যায়নি। কারণ বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব হবে। যদিও এ বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য তেমন কোনো সুখর দেখা যায়নি।

 

কিন্তু বাজটের পর ঠিকই ঘুরে দাঁড়াতে দেখা গেছে পুঁজিবাজার। হয়েছে বড় লেনদেন। দেলদেন ছাড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি। তবে এ লেনদেনে বড় ভ‚মিকা ছিল শীর্ষ বাজার মূলধনধারী কোম্পানিগুলোর। বহুজাতিকসহ এসব কোম্পানিতে নজর রাখছেন বিনিয়োগকারীরা।

 

রোববার বাজারের শীর্ষ মূলধনধারী কোম্পানি গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, ওয়ালটন, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানিসহ সিংহভাগ শীর্ষ বাজার মূলধনধারী কোম্পানির শেয়ার বেশি লেনদেন হয়। যে কারণে লেনদেনও বাড়তে দেখা গেছে।

 

বিনিয়োগকারীরা জানান, এসব কোম্পানির আর্থির অবস্থা ভালো। পাশাপাশি অধিকাংশ কোম্পানি ভালো লভ্যাংশ দেয়। যে কারণে এসব কোম্পানিতে ঝুঁকি কম। এ প্রসঙ্গে মো. সাজেদুল ইসলাম নামে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিক উত্থান এবং পতন কোনোটাই ভালো লক্ষণ নয়। কারণ বাজারে যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন কারসাজির ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। তাই বাজার এ ধরনের আচরণ করলে তা অধিকাংশ আমাদের জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনে না।

 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভিসানীতি নিয়ে কথা বলার পর আমাদের মনোবল আরো চাঙ্গা হয়েছে। যার প্রভাব পুরো বাজারেই পড়েছে।

 

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ের বাজার পরিস্থিতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দায়ী করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত, দেশের পুঁজিবাজারে কিছুদিন আগে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হয়েছেন। যার জেরে বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণও বাড়তে দেখা যায়।

 

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর এক পরিচালক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক এখন ডে ট্রেডারের ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। যে কারণে বাজার তার আসল চিত্রে ফিরে আসতে পারে না। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যদি এটা করেন বাজার নিজস্ব গতি হারাবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রকৃত কাজ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ। এখন দেখছি তার উল্টো চিত্র। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশা করেন না কেউই।’

 

একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শেয়ার বিক্রিতে মেতে উঠেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বিক্রির তুলনায় তারা শেয়ার কিনছেন খুবই সীমিত। যে কারণে বাজারও তার গতি ফিরে পাচ্ছে না। হঠাৎ হঠাৎ এ উত্থানকে আইওয়াশ বলে আখ্যায়িত করেন তারা।

 

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি না থাকলে পুঁজিবাজার তার স্বাভাবিক গতি হারায়। যে কারণে কমে যায় লেনদেন। কমতে থাকে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ও বাজার মূলধন।

 

তারা বলছেন, পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে রাখার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা জরুরি। তাই বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। তাহলে এখন যে পরিবেশ রয়েছে, তা ঠিক থাকবে।

 

জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। কোনো কারণে মার্কেট নিম্নমুখী হলেই অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা ভীত হয়ে তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেন। এতে তারা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

 

তাই এদিকে নজর না দিয়ে বিনিয়োগকারীদের উচিত দেখেশুনে কোম্পানির আর্থিক অবস্থার বিবেচনায় বিনিয়োগ করা।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version