-->

ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব

মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দাভাব। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশও। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে খাদ্যবহির্ভূত পণ্য যেমন: পোশাক, বাড়ি-গাড়ি, সেবা ইত্যাদির দামও বেড়েছে কয়েক গুণ। বিপরীতে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে কমেছে মানুষের আয়। এই অবস্থায় জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি দিতে প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। নারীর ক্ষেত্রে প্রস্তাব করা হয়েছে ৪ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) ব্যক্তির বার্ষিক আয়ের প্রথম ৩ লাখ ৯টাকা পর্যন্ত কর দিতে হয় না। যা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

এবিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, কোম্পানি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ব্যতীত অন্যান্য শ্রেণীর করদাতা বিশেষ করে ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা, করহার এবং করধাপ ২০২০-২১ অর্থবছর হতে অপরিবর্তিত আছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে সম্মানিত করদাতাগণের প্রকৃত আয় (জবধষ ওহপড়সব) হ্রাস পেয়েছে এবং অন্য দিকে করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সম্মানিত করদাতাগণের কর প্রদানে স্বাচ্ছন্দতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমি কোম্পানি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ব্যতীত অন্যান্য শ্রেণীর করদাতা, বিশেষ করে স্বাভাবিক ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাগণের করমুক্ত আয়সীমা কিছুটা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছি। এতে ব্যক্তি করদাতাদের করভার লাঘব হবে বিধায় করদাতারা নিয়মিতভাবে কর পরিশোধে উৎসাহিত হবেন বলে আশা করা যায়। পুরুষ করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লক্ষ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং মহিলা ও ৬৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সের করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৪ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব করছি। একই সাথে সর্বনিম্ন করহার ৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।

 

অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এবং সিটি কর্পোরেশনের বাইরের অন্যান্য এলাকায় কোম্পানি করদাতা ব্যতীত অন্য করদাতাদের জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম কর যথাক্রমে ৫ হাজার, ৪ হাজার ও ৩ হাজার টাকা। আমি ন্যূনতম করের বিদ্যমান কাঠামো অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করছি।

 

অর্থমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রের একজন নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধার বিপরীতে সরকারকে ন্যূনতম কর প্রদান করে সরকারের জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ। এ ধরণের অংশীদারিত্বমূলক অংশগ্রহণ দেশের সক্ষম জনসাধারণের মাঝে সঞ্চারণের লক্ষ্যে করমুক্ত সীমার নিচে আয় রয়েছে অথচ সরকার হতে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এমন সকল করদাতার ন্যূনতম কর দুই হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।

 

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বিত্তশালী ব্যক্তি করদাতাদের নিকট হতে নীট পরিসম্পদের ভিত্তিতে সারচার্জ আদায় করা হয়। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে বিধানটি কার্যকর রয়েছে। ব্যক্তি করদাতার সারচার্জ সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে আয় ও সম্পদ এর সুষম বন্টন নিশ্চিত করে। সারচার্জ আহরণের বিধান পরিপালন সহজীকরণ এবং মধ্যবিত্তদের করভার লাঘবে এ বছর ব্যক্তি করদাতার প্রদর্শনযোগ্য নীট পরিসম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে করদাতার সারচার্জ আরোপের ক্ষেত্রে নুন্যতম সীমা ৩ কোটি হতে ৪ কোটিতে বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি। নীট পরিসম্পদের মূল্যমান ৪ কোটি টাকা অতিক্রম করলে ১০ শতাংশ এবং নীট পরিসম্পদের মূল্যমানের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ কোটি টাকা অতিক্রম করলে সারসার্জের পরিমান ৩৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।

 

 ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version