-->

৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে আইএমএফ

নিজস্ব প্রতিবেদক
৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে আইএমএফ

বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ৯টায় আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে এ ঋণ অনুমোদন করা হয় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

 

আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা (ইসিএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার (ইএফএফ) অধীনে প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আরএসএফ তহবিলের আওতায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বলে সংস্থার ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়। ৪২ মাস ধরে ধাপে ধাপে এই ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করা হবে।

 

অর্থমন্ত্রীর বিবৃতিতে বলা হয়, অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেছিলেন যে আইএমএফ ঋণ দেবে না। এ ঋণ অনুমোদনে প্রমাণিত হলো যে, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাসমূহ শক্ত ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে আছে এবং অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো।

 

বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী আইএমএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা এই ঋণ প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করেছেন তাদের প্রতিও রইল আমার কৃতজ্ঞতা।’ এর আগে আইএমএফের ডিএমডি অ্যান্তইনেত এম সায়েহ ঢাকা সফর করে ঋণ প্রস্তাব সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে উচ্চ পর্যায়ে অবহিত করেন। সেই প্রতিবেদন সোমবার বোর্ডে উপস্থাপন করা হয়। এতে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা, ঋণ দেওয়ার শর্তের বিপরীতে বাস্তবায়ন এবং ভবিষ্যতে কোন কোন শর্ত বাস্তবায়ন করতে হবে, তা উল্লেখ করা হয়েছে।

 

ঢাকা সফরের পর গত ১৬ জানুয়ারি আইএমএফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বলেন, ‘কয়েক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।

 

এসব উদ্যোগ বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাসে এবং জীবনমান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।’অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও এখন বৈশ্বিক ধাক্কার প্রভাব মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই ধাক্কাগুলোর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি দেশটির এই ধাক্কা সামলানোর নানা আয়োজনকে স্বাগত জানাই।’

 

প্রসঙ্গত, দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলার জন্য গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়। এর আলোকে গত বছরের ২৬ অক্টোবর আইএমএফ বাংলাদেশে আসে। তারা ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে ঋণবিষয়ক আলোচনা করে শর্তের বিষয়গুলোর কাঠামো তৈরি করে। এরপর এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করার জন্য সংস্থাটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অ্যান্তইনেত এম সায়েহ ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন। তিনি ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করেন।

 

ইতোমধ্যে আইএমএফের প্রধান শর্তগুলো সরকার বাস্তবায়ন করেছে। তাদের শর্ত অনুযায়ী ভর্তুকি কমাতে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ ও সংস্কারের বিষয়ে দেওয়া শর্তগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version