-->

রেলের নিয়োগে অনিয়মের গন্ধ

রাজন ভট্টাচার্য
রেলের নিয়োগে অনিয়মের গন্ধ

ঢাকা: সরকারের সেবা খাতের অন্যতম হলো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। ক্ষতির ভারে ন্যুব্জ হলেও নিয়োগ-দুর্নীতি অক্টোপাসের মতো ঘিরে ফেলেছে গোটা রেল বিভাগ। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২২ হাজারের বেশি জনবল সংকট বছরের পর বছর। সংকট মোকাবিলায় একের পর এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও বাস্তবতা হলো, প্রতিটি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। যেমন হয়েছে অতীতেও। এর আগে বিভিন্ন পদে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল।

সম্প্রতি একাধিক পদে জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রেলওয়ে। এর মধ্যে রেলওয়ের পয়েন্টসম্যান ৭৬২ পদের প্রথম পরীক্ষা হয় গত ৯ সেপ্টেম্বর। ৫৮৬ জনের সহকারী স্টেশন মাস্টার পদের পরীক্ষা হয় গত ৬ আগস্ট। আর এক হাজারের বেশি খালাসি পদের জন্য পরীক্ষা হয়েছে চলতি মাসেই। বড় বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই অর্থের বিনিময়ে আবারো চাকরি দেয়ার অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দায় এড়াতে নিয়োগ সংক্রান্ত সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রেল মন্ত্রণালয়। নিয়োগে আর্থিক লেনদেন না করা সংক্রান্ত সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি আবারো প্রশ্নবিদ্ধ হলো। তাছাড়া অতীতে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত একাধিক কর্মকর্তাকে নতুন করে নিয়োগ কমিটিতে রাখায় এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সব মিলিয়ে রেলে নিয়োগে অনিয়ম আর আর্থিক দুর্নীতির গন্ধ যেন দূর করা যাচ্ছেই না।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। কোনো অবস্থাতেই টাকা দিয়ে রেল বিভাগে চাকরির সুযোগ নেই। আর টাকা দিয়ে পদ কেনা ঠেকাতেই গত ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্রে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

পদে পদে দুর্নীতি : সুকুমার দে, বয়স ৬৮ বছর। ২০১৯ সালে যখন নিয়োগ পান, তখন তার বয়স ছিল ৬৫। নিয়োগ পাওয়া মো. আবুল বশর খানের বয়স ৫৫। বিজ্ঞপ্তিতে বয়সসীমা ৩০ বছর নির্ধারিত থাকলেও এই দুজনের মতো অনেকের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। শুধু এই নিয়োগ নয়, ২০১৬ সালে ট্রেড অ্যাপ্রেনটিস, ২০১৭ সালে ১৮৫ জন সিপাহি এবং ২০১৮ সালে ‘টিকিট কালেক্টর’ পদের নিয়োগেও আছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।

রেলে সবচেয়ে বড় নিয়োগ হয় খালাসি পদে। এ পদে ৮৬৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৩ সালের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১৯ সালে। সেই নিয়োগ ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর তদন্তে নামেন দুদক চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। দীর্ঘ সময় অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন পরিচালকের কাছে জমা দেন তিনি। এরপর গত বছরের মার্চে রেলের সাবেক জিএম সৈয়দ ফারুক আহমেদসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, খালাসি পদে নিয়োগ পাওয়া ৮৬৫ জনের সবাই ৫-৭ লাখ টাকা করে ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন। এই নিয়োগ ঘিরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য পায় দুদক। এর মধ্যে ৭২ জন নিয়োগ পান জাল সনদ দিয়ে। ১০-১২ জন বয়স কারচুপি করেন। ২৫ জন নিয়োগ পান এনআইডি জালিয়াতি করে।

ফাঁস হয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র : ২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর রেলওয়ের ট্রেড অ্যাপ্রেনটিস পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। এ ঘটনায় বিপাকে পড়ে পরীক্ষা বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। এই নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০১০ সালে দায়িত্ব পালন করা সাবেক জিএম ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধেও বেশ কয়েকটি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তিনি ফুয়েল চেকার, টিকিট চেকার, গুডস সহকারীসহ ১৩টি দুর্নীতি মামলার আসামি। এর মধ্যে দুটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। ১১টি মামলা এখনো চট্টগ্রাম আদালতে বিচারাধীন। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল রাতে তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএসের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনার পর রেলওয়ের জনবল নিয়োগে দুর্নীতির খবর প্রথম ফাঁস হয়।

প্রতি পদে ঘুষ ১০ লাখ টাকা : রেলওয়েতে সম্প্রতি এক নিয়োগে একটি পদের বিপরীতে ৭-১০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার তথ্য তদন্ত রিপোর্টে উঠে আসে, যা নিয়ে রেলওয়ের বিরুদ্ধে ২৮টি মামলা করেছেন নিয়োগবঞ্চিতরা। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে- লিখিত পরীক্ষায় ১৩ পাওয়া প্রার্থীকে খাতায় নম্বর কেটে ৭৩ নম্বর লিখে দেয়া হয়, আবার ৯ পাওয়া প্রার্থীকে অর্থের বিনিময়ে ৮৯ নম্বর খাতায় লিখে দিয়ে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়। এসবের বিরুদ্ধে চাকরি না পাওয়া প্রার্থীরা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। সে কারণে ওই পদে নিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন। এর ফলে লোকবল সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ ছাড়া রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে একজন কম্পিউটার ডাটা অপারেটর ভুয়া নিয়োগ দিয়ে মাসের পর মাস বেতন-ভাতা বাবদ ৭০-৭৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন, যা সবার জানা। বর্তমানে তিনি হাজতবাস করছেন।

পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : চলতি বছরের ২৮ আগস্ট রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীতে ১৮৫ জন সিপাহি নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক, চিফ কমান্ড্যান্টসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক বাদী হয়ে চট্টগ্রাম দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক মহাব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ রেলওয়ে, সিআরবি, চট্টগ্রাম; নিয়োগ অনুমোদনকারী সৈয়দ ফারুক আহামেদ (৬০), চিফ কমান্ড্যান্ট পূর্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, রেলওয়ে সিআরবি; মো. জহিরুল ইসলাম (৫১), চিফ কমান্ড্যান্ট পশ্চিম, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, রেলওয়ে, রাজশাহী; মো. আশাবুল ইসলাম (৩৯), সাবেক কমান্ড্যান্ট, সদর, রাজশাহী; ফুয়াদ হাসান পরাগ (৩৩), মো. সিরাজ উল্যাহ (৬০), সাবেক এসপিও/পূর্ব।

এদের মধ্যে ফারুক আহামেদ এবং সিরাজ অবসরে গেছেন এবং ফুয়াদ হাসান পরাগ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব হিসেবে বর্তমানে কর্মরত আছেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ২০১৭ সালে সিপাহি (আরএনবি) চতুর্থ শ্রেণির ১৮৫ পদে নিয়োগের ছাড়পত্র দেয়া হয়। একই বছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিশেষ কোটার প্রার্থী যেমন : মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও পোষ্য কোটার প্রার্থীদের কাছাকাছি নম্বর দিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ দেখিয়ে ওই কোটায় পছন্দের প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় পাস দেখিয়ে চাকরি দেয়ার সুযোগ করে দেয়। এ ছাড়া বিভাগীয় কোটা, জেলা কোটা, পোষ্য কোটাসহ অন্যান্য কোটা বিধি মোতাবেক যথাযথভাবে প্রতিপালন না করার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

নিয়োগবাণিজ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি সিপাহি নিয়োগ প্রধান : যার বিরুদ্ধে নিয়োগবাণিজ্যের অভিযোগে মামলা, এবার সেই আসামিই হয়ে উঠলেন ৮০৬ জন সিপাহি নিয়োগ কমিটির প্রধান! তিনি আর কেউ নন, পূর্বাঞ্চলের চিফ কমান্ড্যান্ট জহিরুল ইসলাম।

২০১৭ সালে ১৮৫ জন সিপাহি পদে লোক নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সেই অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পায় দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক। এ কারণে তাকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। নিয়োগবাণিজ্যের জন্য অভিযুক্ত সেই জহিরুলকে আবারও এ নিয়োগ কমিটির প্রধান করায় গোটা রেলে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

নিয়োগ আর বদলিবাণিজ্য, টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের পদোন্নতি এবং পছন্দের পাত্রদের গুরুদণ্ডের পরিবর্তে লঘুদণ্ড কিংবা দণ্ড মওকুফ করে দেয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে চিফ কমান্ড্যান্ট জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে রেলের পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলে বদলি করা হলেও সেখানে যাননি তিনি। রাতারাতি বদলে যায় সরকারি আদেশ।

আশাবুল ইসলামের হাতেও নিয়োগ : আরএনবির পশ্চিমাঞ্চলের বর্তমান চিফ কমান্ড্যান্ট মো. আশাবুল ইসলামকেও নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতর সেই একই মামলায় আসামি করা হয়েছে। কিন্তু রেলের পশ্চিমাঞ্চলে আরএনবির চারজন এসআই ও ২০ জন এএসআই নিয়োগে যে কমিটি করা হয়েছে, সেই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে তাকে! দুটি কমিটিই করা হয়েছে একই দিনে। অভিযুক্তরা পরস্পরের যোগসাজশে অনিয়ম-দুর্নীতি করেন বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ৮০৬ জন সিপাহি নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য গত ৩০ জুন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-১ অধিশাখার উপসচিব মো. তৌফিক ইমাম স্বাক্ষরিত আদেশে একটি নিয়োগ কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। ওই কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে আরএনবি ঢাকার কমান্ড্যান্ট মো. শহীদুল্লাহকে। নিয়োগে দুর্নীতির দায়ে মামলা হওয়া চিফ কমান্ড্যান্টকে ফের বড় ধরনের একটি নিয়োগ কমিটির প্রধান করায় বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবার সিনিয়র কমান্ড্যান্ট থাকার পরও ঢাকার কমান্ড্যান্ট হিসেবে চলতি দায়িত্বে থাকা মো. শহীদুল্লাহকে কমিটির সদস্য সচিব করার বিষয়টি নিয়েও একইভাবে প্রশ্ন উঠেছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর চট্টগ্রামের সিআরবির আরএনবি চিফ কমান্ড্যান্ট জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৭ সালে ১৮৬ জন সিপাহি নিয়োগে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়নি। বাহিনীর নিয়োগবিধি মেনেই সিপাহি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর পরও দুদকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করছিলেন। কিন্তু সেই তদন্ত চলাকালেই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক সিরাজুল হক স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত করে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।’

নিয়োগ কমিটিতে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী আমারই নিয়োগ কমিটি গঠন করার কথা। কিন্তু আমি বিষয়টি রেলের মহাপরিচালকের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। মহাপরিচালকও নিজে না করে মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দেন। মন্ত্রণালয় আমাকে নিয়োগ করে আস্থা রেখেছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে লোকবল নিয়োগের কাজটি সেরে আমি আস্থার প্রতিদান দিতে চাই।’

এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম জাহাঙ্গীর হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘নিয়োগ কমিটি করেছে মন্ত্রণালয়। তাই যাদের নিয়োগ কমিটিতে রাখা হয়েছে, তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেবে।’ এ নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবিরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দুদকের পক্ষ থেকে যেহেতু মামলা করা হয়েছে, তাই মামলার কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তবে নিয়োগ কমিটিতে থাকা অভিযুক্তদের বিষয়টি না দেখে কিছু বলা যাবে না।’

রেলওয়েতে শূন্যপদ ২২ হাজার : রেলওয়ের শূন্য পদের সংখ্যা ২২ হাজার ৭০৪। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির পদ ২০১টি, দ্বিতীয় শ্রেণির ১ হাজার ৬০১টি, তৃতীয় শ্রেণির ৮ হাজার ৫৭৫টি এবং চতুর্থ শ্রেণির ১২ হাজার ৩২৭টি। সম্প্রতি সংসদে এ তথ্য তুলে ধরেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম।

শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, শূন্য পদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ১৪টি ও দ্বিতীয় শ্রেণির ৫৫৪টি পদের চাহিদা ইতোমধ্যে পিএসসিতে পাঠানো হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৭ হাজার ৩৫১টি পদের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির ৪৪১টি এবং চতুর্থ শ্রেণির ২ হাজার ৮১২টিসহ ৩ হাজার ২৫৩টি পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ১৭ জুন এএলএম গ্রেড-২ ও গার্ড গ্রেড-২ পদের নিয়োগ পরীক্ষা হবে।

নিয়োগ সংক্রান্ত সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি : স্বচ্ছতার সঙ্গে রেল বিভাগে জনবল নিয়োগ করা হবেÑ এ কথা উল্লেখ করে কারো সঙ্গে আর্থিক লেনদেন না করতে বিভিন্ন সংবাদপত্রে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রেল মন্ত্রণালয়।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে ও স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন হয়েছে বিধায় সংশ্লিষ্টদেরকে এ সংক্রান্ত কোনো প্রলোভনে পড়ে আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে চাকরি প্রদান করা হবে মর্মে নিয়োগপ্রার্থীদের প্রলোভন দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের প্রলোভনের প্রস্তাব করলে বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত বিভিন্ন মোবাইল ও টেলিফোন নম্বর এমনকি ই-মেইলে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপসচিব আলমগীর হুছাইন বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।’

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version