সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের ৩৯-তম ব্যচের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেপুটি রেজিস্টার-১ (নিরাপত্তা) সুদীপ্ত শাহিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন।
নিহত শামীম সাভারের আশুলিয়া থানার কাঠগড়া এলাকার মোল্লা বাড়ির ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (৩৯ ব্যাচ) ইতিহাসের বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
মামলার এজাহারে আসামিরা হলেন, জাবির বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) শিক্ষার্থী মো. আহসান হাবীব (২৪), সরকার ও রাজনীতি বিভাগের (৪৫ ব্যাচ) রাজু আহাম্মদ (২৫), ইংরেজী বিভাগের (৫০ ব্যাচ) মাহমুদুল হাসান রায়হান (২০), ইতিহাস বিভাগের (৪৪ ব্যাচ) জুবায়ের আহমেদ (২৪), ইংরেজী বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) হামিদুল্লাহ সালমান (২১), ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) মো. আতিকুজ্জামান (২১), সিএসই বিভাগের (৪৭ ব্যাচ) সোহাগ মিয়া (২৩) এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের (৪৬ ব্যাচ) মোহাম্মদ রাজন মিয়া (২৫)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫ জন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলো বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে মারধরের ঘটনায় শনাক্ত হওয়া সমন্বয়ক আহসান লাবিবকে অব্যাহতি দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এর আগে শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে ছাত্রদলের চার জন হলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাজন মিয়া, ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজু আহাম্মদ, ইংরেজি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হামিদুল্লাহ সালমান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহাগ মিয়া; সমন্বয়ক একজন হলেন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আহসান লাবীব; এ ছাড়া তিন সাধারণ শিক্ষার্থী হলেন ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মাহমুদুল হাসান রায়হান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আতিকুজ্জামান আতিক ও ইতিহাস বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ।
প্রসঙ্গত: বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে আটক করে মারধর করে। গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় শামীমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা তাকে আরেক দফা গণপিটুনি দেয়। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সাভার গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্খকর্তব্যরত চিকিৎসক শামীম মোল্লা কে মৃত ঘোষণা করেন।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য