-->

১২ বছর বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ, টাকা দিলেন অবসরের পর

বগুড়া প্রতিনিধি
১২ বছর বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ, টাকা দিলেন অবসরের পর
টাকা পরিশোধ করেছেন বেলাল উদ্দিন

এলজিইডির অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী বেলাল উদ্দিন (৬৪) ছাত্রাবস্থায় প্রায় ১২ বছর টিকিট ছাড়াই ট্রেনে বগুড়ার সোনাতলার বাড়ি থেকে বগুড়া শহরে যাতায়াত করেছেন। বগুড়া শহরের জহুরুলনগর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাসকারী ওই ব্যক্তি বিবেকের তাড়নায় মঙ্গলবার বিকেলে স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজুর কাছে হিসাব করে সাত হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন।

 

জানা গেছে, বেলাল উদ্দিন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার সুজাইতপুর গ্রামের মৃত নাজের উদ্দিন মন্ডলের ছেলে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। সেখান থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ১৯৮৩ সালে এলজিইডিতে চাকরি পান। ৩৭ বছর কর্মজীবন শেষে করে ২০২০ সালে বগুড়ার কাহালু এলজিইডি থেকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে অবসরে যান। ২০১০ সালে সপরিবারে হজ পালন করেন। বর্তমানে স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে বগুড়া শহরের জহুরুলনগর এলাকার বাড়িতে বসবাস করেন।

 

বেলাল উদ্দিন জানান, তিনি ছাত্রাবস্থায় ১৯৭০ সালে ১০ বছর বয়স থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ২২ বছর বয়স পর্যন্ত ১২ বছর সোনাতলা স্টেশন থেকে ট্রেনে বগুড়া শহরে যাতায়াত করেছেন। এ সময় তিনি অধিকাংশ সময় বিনা টিকিটে যাতায়াত করেছেন। ট্রেন জাতীয় সম্পদ, ফাঁকি দেওয়ায় তিনি এখন অনুশোচনায় করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে আলেমদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সে হিসাবে তার ট্রেনের টিকিট না কেটে রেল বিভাগ বা সরকারকে ছয় হাজার ২০০ টাকা ফাঁকি দিয়েছেন। তাই তিনি সাত হাজার টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি বগুড়া রেল স্টেশনে মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজুর কাছে এসে তার বিষয়টি জানান। এরপর সরকারি কোষাগারে সাত হাজার টাকা জমা দেন।

 

তিনি আরও জানান, এখন তিনি ঋণমুক্ত। এ টাকা পরিশোধ না করায় তিনি অনেক অনুশোচনায় ভুগেছিলেন। শেষে স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ঋণ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন। দেশের সব নাগরিককে ট্রেনে বিনা টিকিটে যাতায়াত না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

বগুড়ার স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু জানান, এলজিইডির অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী বেলাল উদ্দিনের বিষয়টি অনেক স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার ওই সাত হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। অনেকে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকেন। যা কখনও উচিত নয়। বিবেকের তাড়নায় এর আগেও এক নারী ১০ টাকা জমা দিয়েছেন।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version