-->
শিরোনাম

কলেজে বসেই পড়ান প্রাইভেট, ব্যবহারিক নম্বরের জন্য নেন টাকা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
কলেজে বসেই পড়ান প্রাইভেট, ব্যবহারিক নম্বরের জন্য নেন টাকা
অভিযুক্ত গণিত বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেন

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তিনি ক্লাসের সময় শ্রেণিকক্ষে বসে নিয়মিত প্রাইভেট পড়ান। এছাড়াও, সম্প্রতি ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর (মার্ক) দেওয়ার কথা বলে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন।

 

রোববার সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক, উল্লাপাড়া ইউএনও ও সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

 

বুধবার সরেজমিনে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে।

 

লিখিত অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৪ তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার জাকির হোসেন ২০০৫ সালের জুলাই মাসে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৯ বছর একই কর্মস্থলে থাকায় তিনি কলেজ ঘিরে তৈরি করেছেন নিজস্ব বলয়। বাগিয়ে নিয়েছেন কলেজ শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদদের পদটিও। সেই বলয় ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেই কলেজে ক্লাস চলাকালীন সময়ে তিনি প্রাইভেট পড়ান এবং নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন।

 

জানা গেছে, ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয়ে বাধ্যমূলক তার কাছে প্রাইভেট পড়েন শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে আসছে বলে জানান অনেকেই। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা আগেও কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সমাধান মেলেনি।

 

উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা পাপ্পু, মারুফ সিদ্দিক, সাজ্জাদ হোসেন খান, মো. রাব্বি, অনন্ত রানাসহ একাধিক শিক্ষার্থী ভোরের আকাশকে বলেন, জাকির হোসেন এখনো অর্নাস ১ম বর্ষের ক্লাসের সময় শ্রেণিকক্ষে বসে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন এবং তার জন্য টাকাও নিচ্ছেন। এছাড়াও, তিনি অর্নাস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষার মার্ক দেওয়ায় কথা বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০-৮০০ টাকা করে নিয়েছেন। যা নিয়ম বহির্ভূত ও অবৈধ। আর এই টাকা না দিলে আমাদের ফেল করানোর ভয় দেখান। বিষয়গুলো আমরা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসন, ইউএনও ও অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছি।

 

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ ভূঁইয়া ভোরের আকাশকে বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বরাবর দাখিল করেছে। তারা সোমবার আমার কাছেও একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমি সেটি গ্রহণ না করে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ সিনিয়র শিক্ষকদের বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছি। সে মোতাবেক তারা অভিযোগকারী শিক্ষার্থীসহ অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করছেন।

 

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিবার কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

 

তবে বিষয়টি নিয়ে উল্লাপাড়ার ইউএনও সানজিদা সুলতানা ভোরের আকাশকে বলেন, অভিযোগের কপিটি হাতে পেয়েছি। বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version