-->

রমজানের শুরু থেকে পর্যটক নেই, সুনসান কুয়াকাটা সৈকত

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
রমজানের শুরু থেকে পর্যটক নেই, সুনসান কুয়াকাটা সৈকত
অনেকটা ফাঁকা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। ছবিটি মঙ্গলবার সকালে তোলা

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য পর্যটকের কাছে বেশ আকর্ষণীয় সাগরকন্যাখ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। পদ্মা সেতু চালুর পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সৈকত ভ্রমণপিপাসুদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

 

সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ সরকারি ছুটিগুলোয় দেশি-বিদেশি পর্যটকে মুখর থাকে। তবে হঠাৎ সৈকতে পর্যটক আসা কমে গেছে। জানা গেছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে কুয়াকাটা সৈকতে।

 

কিন্তু রমজানের প্রথম দিন থেকে পর্যটকশূন্য। তবে দশম রমজানের পর পর্যটক বাড়বে। ঈদের পর পর্যটকে কুয়াকাটা মুখর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

সৈকত ঘুরে দেখা যায়, হাতে গোনা কয়েকজন পর্যটক জিরো পয়েন্ট এলাকায় আছেন। ১৮ কিলোমিটার সৈকত, ঝাউবন, শুঁটকিপল্লি, লেম্বুরবন, মিশ্রীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ফাঁকা। আবাসিক হোটেলগুলো নামমাত্র খোলা। তবে খাবার হোটেল, ফিশ ফ্রাই মার্কেট, ফুচকা-চটপটি, ওয়াটার বাইক, স্পিডবোট ও ভাসমান দোকান বন্ধ।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটকদের সেবা দেয়া ১৬টি পেশার বেশিরভাগ মানুষ এখন অলস সময় পার করছেন। কেউ কেউ ঈদের পরের সময়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সৈকতে দুই শতাধিক ফটোগ্রাফার আছেন। তবে এ দিন দেখা মেলে ১০-১৫ জনের।

 

মাসুদ নামে এক ফটোগ্রাফার জানান, রমজান শুরুর আগে শুক্র-শনিবার একজন ফটোগ্রাফার দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার টাকা আয় করেন। এখন ১০০ থেকে ২০০ টাকাও আয় করতে পারছেন না। এ কারণে অনেকে অন্য কাজে সময় দিচ্ছেন।

 

সূত্র জানায়, কুয়াকাটায় রাতযাপনের জন্য ছোট-বড় ১৭০টির বেশি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এগুলোর ধারণক্ষমতা প্রায় ২০ হাজার জন। ছুটির দিনগুলোয় লাখো পর্যটকের আগমন ঘটে সৈকতে। আশপাশের বাসাবাড়িতেও অবস্থান নেন পর্যটকরা।

 

কিন্তু হোটেল ও বাড়িতেও এখন সে ব্যস্ততা নেই। হোটেল সাউথ স্টারের পরিচালক ইসমাইল হোসেন জানান, তার হোটেলে ৩০টি কক্ষ রয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ছুটির দিনগুলোয় শতভাগ অগ্রিম বুকিং থাকত।

 

অন্য দিনগুলোয় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ কক্ষ বুক করতেন পর্যটকরা। তবে সপ্তাহের শুরুতে মাত্র দুটি কক্ষ বুকিং ছিল। ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সভাপতি জনি আলমগীর বলেন, পর্যটকদের বোটের মাধ্যমে সাইড ট্যুর করান তারা। এ বছর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক এসেছে। কিন্তু রমজানের শুরুতে পর্যটক কমে গেছে। তাদের শতাধিক বোট নোঙর করে রেখেছেন। ঈদের পর সেগুলো ফের চালু করা হবে।

 

একই ধরনের কথা জানান ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার। তিনি বলেন, ঈদের পরে অনেক অগ্রিম বুকিং রয়েছে। হোটেল-মোটেলগুলো কাজ সেরে নিচ্ছে।

 

এক সময় ঢাকা-কুয়াকাটা পথে ১০টির বেশি ফেরি থাকলেও এখন সড়কপথেই আসা যায়। পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।

 

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, কুয়াকাটার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের বিভিন্ন দল কাজ করছে।

 

এখন পর্যটক কম থাকলেও যারা আছেন, তাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version