-->

পিএমখালী খালে বাঁধ দিয়ে অবৈধ মৎস্য ঘের

এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার
পিএমখালী খালে বাঁধ দিয়ে অবৈধ মৎস্য ঘের

এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার: পরিবেশ প্রতিবেশের ক্ষতিসাধন করে চলমান খালের ওপর বাঁধ নির্মাণ করায় ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ। উন্মুক্ত খালে মৎস্য আহরণকারী পাঁচশতাধিক মৎস্যজীবী পড়েছেন মহাবিপাকে। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর ঐতিহ্যবাহী শাখানদী বা পাতলী মাছুয়াখালী খালের ওপর বাঁধ নির্মাণ করে অবৈধ মৎস্য ঘের করেছেন প্রভাবশালী মহল।

 

ফলে পরিবেশ প্রতিবেশের ওপর পড়েছে মারাত্মক প্রভাব। কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর পাতলী মাছুয়াখালী খালের ওপর বাঁধ দেয়ায় শতশত একর সরকারি খাসজমি অবৈধ দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী চক্র। এ খালের বাঁধ কেটে দিয়ে সর্বসাধারণের ব্যবহার উপযোগী করতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।

 

অভিযোগ দায়েরকারী কৃষক নুরুল কবির জানান, ২০০ বছরের পুরোনো খালের ওপর বাঁধ দেয়ায় ওই খালের পানি দিয়ে সেচ করতে পারছেনা শতশত কৃষক। কৃষক মোহাম্মদ হাসান জানান, শুধু আজকের দিনে না আমাদের পূর্ব পুরুষরা বংশানুক্রমিক ভাবে ওই খালের পানি দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদন করে এসেছেন। এই খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় চাষাবাদ ও মৎস্যজীবীদের সুবিধার্থে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এই খাল বিএডিসি কর্তৃপক্ষ খনন করেছিলেন।

 

এর আগেও এ খাল একাধিকবার খনন করা হয়। চলতি মৌসুমে খালে বাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের করায় পিএমখালীসহ পার্শ্ববর্তী ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ একর জমির চাষাবাদ হচ্ছে না। তাই এই খাল জনস্বার্থে দ্রুত খুলে দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। স্থানীয় জেলে, মোজাম্মেল হক বজল কবির ও নুরুল আবছার বলেন, আমাদের বাপ-দাদারা এই খাল থেকে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। আমাদের প্রায় ৫০০ জেলে পরিবারের সংসার চলে এই খালের মাছ শিকার করে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী রফিক, শফি ও জালালের নেতৃত্বে খালের দেয়া হয়েছে বাঁধ। ফলে এ খালে মাছ শিকার ও চাষাবাদ হচ্ছে ব্যাহত।

 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিএডিসির কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে খালের ওপর বাঁধ দেয়ার সাহস পেয়েছে প্রভাবশালীচক্র। এ বিষয়ে বিএডিসির কর্মকর্তা সওকত হোসেন এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, বর্ষাকালে ভেঙে দেয়া হবে। এখন কেন দিচ্ছেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা ইউএনওর কাছে যান। তিনিই ব্যবস্থা নেবেন।

 

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়ার কাছে রোববার এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ বিধায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। প্রভাবশালী যতবড় শক্তিশালী হোক সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লেখ্য পিএমখালী ঝিলংজা, ভারুয়াখালী ও চাকমারক‚ল ইউনিয়নের শতশত একর জমির চাষাবাদ হতো এই খালের মিঠাপানি দিয়ে। এই খালের দুই কিলোমিটারের ওপর দিয়ে বাঁধ দেয়ায় অনাবাদি পড়েছে কৃষিজমি ও শীতকালীন সবজি ক্ষেত।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version