-->

দূর্গম চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলাবে ভুট্টা

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
দূর্গম চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলাবে ভুট্টা
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় বালুচরের একটি ভুট্টাক্ষেত

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় দূর্গম চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। উৎপাদন খরচ কম, দাম ভালো ও চাহিদা বেশি থাকায় ভুট্টা চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের। বন্যার পরে জেগে ওঠা বালুচরে ভুট্টা আবাদ করেন কৃষকেরা। আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।

 

ইসলামপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনায় জেগে উঠা বালুর চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি এবার ভুট্টা চাষ হয়েছে।

 

জানা গেছে, গত বছর মণপ্রতি ভুট্টা ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা আর সেই ভুট্টা এ বছর কৃষকেরা ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন। সেজন্য যেসব জমিতে গত বছরও ধান আবাদ হতো, সেসব জমিতে মাঠের পর মাঠ দেখা যাচ্ছে ভুট্টার চাষ।

 

জামালপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেলায় ১১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। আর চলতি বছরে ১৪ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হচ্ছে। এতে উৎপাদনের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

 

সম্প্রতি সময়ে ইসলামপুর উপজেলার বেলাগাছা ইউনিয়নের দুর্গম মন্নিয়া চর,সাপধরীর প্রজাপতিচর,কাটমা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেগে উঠা বালুর চরে যেদিকেই দু-চোখ যায় সেদিকেই ভুট্টার লম্বা লম্বা সবুজ পাতা আর পাতা।

 

দুর্গম মন্নিয়া চরের ভুট্টার মাঠে কথা হয় হযরত আলী নামে এক কৃষকের সাথে। ফসল কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবারই প্রথম তিন একর জমিত ভুট্টা চাষ করেছি। আশা করছি ভালোই ফলন হবে। কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে ফলন আরও বেশি হবে বলে বিশ্বাস তার।

 

আমজল মিয়া নামে আরেক কৃষক জানায়, প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ,সেচ, সার ও কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘায় ভুট্টার ফলন হয় ৩৫ থেকে ৪০ মণ। বর্তমানে মণপ্রতি ভুট্টা ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খরচ বাদ দিয়ে এতে প্রতি বিঘায় ৩৭ থেকে ৪৯ হাজার টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।'

 

সাপধরী ইউনিয়নের কয়েকজন ভুট্টা চাষীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় অধিকাংশ কৃষকেরা ভুট্টা চাষ করেছেন।

 

কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসসহ সংশি¬ষ্টরা কৃষকের দ্বারে দ্বারে এসে ভুট্টা চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণ তুলে দিলেও ভুট্টা চাষ শুরুর পর কোনো অফিসার তাদের ক্ষেত পরিদর্শন করতে আসেনি। দুর্গম এই চরাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় মৌসুম শেষে ভুট্টা বিক্রি নিয়ে চিন্তিত তারা। দেশের বিভিন্নখাতে ভুট্টার পর্যাপ্ত চাহিদা থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে নায্যমূলো পেতেও তাদের ভেতরে শঙ্কা রয়েছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিসার এ এল রেজুয়ান জানান, যমুনার চরাঞ্চলের বালিমাটি ভুট্টা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় প্রতিবছর কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভালো আবহাওয়ার কারণে ভুট্টার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version