-->

বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাতে দোকান, ভোগান্তিতে পথচারীরা

বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ
বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাতে দোকান, ভোগান্তিতে পথচারীরা
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফুটপাতে ভ্যান, ট্রলি এবং দোকান বসিয়ে ফুটপাত দখলে রেখেছে হকাররা। ছবিটি বৃহস্পতিবার তোলা

বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ: সম্প্রতি জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট ও সড়কের অর্ধেকজুড়ে তিন চাকার যানের স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু মাস পেরোতেই ফের বেদখল হয়ে গেছে ফুটপাত। এতে চলাচলে ফের চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরা।

 

জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ দোকানপাট ও মালামাল সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান। সে সময় অবৈধ দোকানপাট ও মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিলেও কিছুদিন পর ফের ফুটপাত তাদের দখলে নেয় অবৈধ দখলদাররা। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ পথচারীরা। এর ফলে প্রতিনিয়তই ঘটে দুর্ঘটনা।

 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মিত ফুটপাতে ভ্যান, ট্রলি, ফ্লেক্সিলোড, ফল ও পান-সিগারেটের দোকান বসিয়ে ফুটপাত দখলে রেখেছে শতাধিক হকার। এছাড়া ফুটপাতের পাশের দোকান ও হোটেলে ওঠানামা করার জন্য কাঠের তৈরি সিঁড়ি বসিয়ে পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এতে পথচারীদের চলাচলে যেমন অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি সিএনজি, হ্যালোবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন পার্কিংয়ে অসুবিধা হচ্ছে চালকদের।

 

বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাতে ভ্যানে করে হালিম বিক্রেতা আইয়ুব আলী জানান, তিন বছর ধরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হালিম বিক্রি করেন তিনি। আরিফ নামের আরেকজন ডিম বিক্রেতা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যবসা করেন তিনি। আগে পুলিশ মাসে মাসে টাকা নিত, তখন কোনো ঝামেলা হতো না। তবে এখন পুলিশ টাকা নেয় না। তাই মাঝে মাঝে এসে ঝামেলা করে।

 

তিনি বলেন, আমরা ফুটপাতের ব্যবসা শিখেছি। অন্য কোনো কাজ জানি না। তাই পুলিশের দৌড়ানি খেয়ে হলেও এসব করেই সংসার চালাতে হয়।

 

ফুটপাতের পাশের ভাই ভাই হোটেলের মালিক মো. বাবুল হোসেন বলেন, হোটেলের সামনের ফুটপাতে হালিমের ড্যাগ বসিয়েছি। এটা পুলিশ ও নেতারা জানে। তারা সবসময়ই আমার হোটেলে আসে। আমাদের কারণে পথচারীদের কোনো সমস্যা হয় না। তারা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।

 

পথচারী ফজলুল হক ও লিটন মিয়ার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, ফুটপাতের অবৈধ দোকান ও ফুটপাতের পাশের হোটেল ও অন্য ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখল করে রেখেছে। এতে আমাদের চলাচলে খুবই অসুবিধা হয়। পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে দ্রুত ফুটপাত দখলমুক্ত করার দাবি জানান তারা।

 

সিএনজিচালক খোকন মিয়া বলেন, আশপাশের ব্যবসায়ী ও হকাররা ফুটপাত দখল করে রেখেছে। ফলে আমরা নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি পার্ক করতে পারি না। এ কারণে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে।

 

হ্যালোবাইক চালক মিজানুর রহমান বলেন, ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট থাকায় আমরা সিরিয়াল মেনে গাড়ি চালাতে পারি না। আমাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও হ্যালোবাইক ও সিএনজিগুলো এলোমেলো অবস্থায় থাকে। আবার রাস্তার মাঝখানে পেলে পুলিশ গাড়ি আটক করে। আমরা খুবই খারাপ অবস্থায় আছি। আমাদের সমস্যা দেখার কেউ নেই।

 

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ মিরাজ হোসেন বলেন, ফুটপাতের অবৈধ দখলদারদের কারণে বাসস্ট্যান্ডের যানবাহনগুলো এলোমেলো অবস্থায় থাকে। ফুটপাত অবৈধভাবে বেদখল হওয়ার ফলে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগের অনেক সমস্যা হয়।

 

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট বসানোর কোনো সুযোগ নেই। ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে নিয়মিত আমাদের অভিযান চলে। কেউ ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে দোকানপাট বসালে তাদের উচ্ছেদসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version