-->

ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা

রাজশাহী ব্যুরো
ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা
রাজশাহীর বাগমারার একটি ইটভাটা

রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহীর বাগমারায় কয়েকটি ইউনিয়নে ব্যাঙের ছাতার মতো নির্মাণ করা হয়েছে অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা। বছরের পর বছর ধরে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালিত হলেও অদৃশ্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না প্রশাসন।২০১৩ সালের সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ড্রাম চিমনি ইটভাটা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৭টি অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা চলমান রয়েছে।

 

এসব ইটভাটা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে। এছাড়া ভাটায় পোড়ানের জন্য বাধ্য হয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে বসতবাড়ির আশপাশে ড্রাম চিমনি ইটভাটা নির্মাণ করায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ পড়েছে হুমকির মুখে। এ সকল ড্রাম চিমনি ইটভাটার মালিকরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে সরকার নিষিদ্ধ ইটভাটা।

 

স্থানীয় জনসাধারণ অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও রহস্যজনক কারণে তা বন্ধ করা হয়নি। এ নিয়ে জনগণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই বলেন, অবৈধ ইটভাটার কারণে পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় দিন দিন বেড়ে চলেছে বিভিন্ন প্রকার রোগব্যাধি। সেইসঙ্গে ফলজ গাছে দেখা যাচ্ছে না ফল। আরো জানা গেছে, উপজেলার ১৭টি ড্রাম চিমনি ইটভাটার কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। সরকারি নিয়ম ভেঙে এসকল ইটভাটা পরিচালনা করা হলেও আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান না করে ওইসকল ভাটা পরিচালনা করতে সহযোগীতা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

 

অবৈধ ইটভাটাগুলোর মধ্যে রয়েছে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নে খোরশেদ আলমের বিআরবি ব্রিকস, সাইফুল ইসলামের এএনএএম ব্রিকস, আফসার আলীর এসটিএআর ব্রিকস, বাবুল হোসেনের এআরআইএফ ব্রিকস, শহিদুল ইসলামের এমআইএসজি ব্রিকস, নরদাশ ইউনিয়নের আব্দুস সামাদ প্রাং এরএমআরএবি ব্রিকস, একই ইউনিয়নের আবুল কাশেমের ২০২২ ব্রিকস জয়পুর, শফিকুল ইসলামের এমএস-২ ব্রিকস, কাউসার হাবিবের মনির ব্রিকস, মঞ্জুর রহমানের মমেনা ব্রিকস, জাহিদুল ইসলামের কেজেএ ব্রিকস, দ্বীপপুর ইউনিয়নের সোহরাব হোসেন তোতার এমএমবি ব্রিকস, আউচপাড়া ইউনিয়নের দুলাল হোসেনের এসটিবি ব্রিকস, একই ইউনিয়নের জিএম হাফিজুর ইসলামের একতা ব্রিকস, আনছার আলীর এমএসবি ব্রিকস, বাসুপাড়া ইউনিয়নের রেজাউল হকের এমএবি ব্রিকস, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের কালাম হোসেনের রুমা ব্রিকস।

 

সরেজমিনে এসকল ড্রাম চিমনি ইটভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, ব্যক্তিমালিকানা ইটভাটার পাশাপাশি সরকারি রাস্তার বিভিন্ন গাছপালা কেটে পোড়ানো হচ্ছে। এ ব্যাপারেও অভিযোগ করা হলে প্রশাসন কোন ভূমিকা নিচ্ছে না। ফলে দিনের পর দিন ইটভাটার মালিকরা বেপরোয়াভাবে তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে জনমনে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতিকারী অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএফএম আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটার তালিকা তৈরি করছি। এরই মধ্যে কয়েকটি ইটভাটায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। জরুরিভাবে অবৈধ ভাটাগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত করা হবে। সরকারি আইন অমান্য করে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version