-->

সাংবাদিক আবু আজাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে ডিআইজিকে সিইউজের স্মারকলিপি প্রদান

চট্টগ্রাম ব্যুরো
সাংবাদিক আবু আজাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে ডিআইজিকে সিইউজের স্মারকলিপি প্রদান
ডিআইজি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সাংবাদিক চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অস্ত্রের মুখে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদক আবু আজাদকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার, ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মামলার চার্জশিট দাখিলের দাবিতে ডিআইজি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সাংবাদিক চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)।

 

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের উপ- মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেনের কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেন সিইউজে নেতৃবৃন্দ। এসময় সাংবাদিক আবু আজাদকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় ন্যায় বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও দ্রুত আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিলের জোর দাবি জানিয়েছেন সিইউজে নেতৃবৃন্দ।

 

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক মামলা দায়েরর পর ১৮ দিনেও প্রধান আসামি ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন ও মারধরের নির্দেশদাতা চেয়ারম্যান মো. সিরাজ উদ্দিন চৌধুরীসহ বাকিরা গ্রেফতার হয়নি। এ ঘটনায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। উল্টো মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে ও ভুক্তভোগী দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।

 

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, আমাদের সহকর্মীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে যে কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে, তা পেশাদার সাংবাদিকদের জন্য আতঙ্কের। কিন্তু ঘটনার ১৯ দিন পার হলো। প্রধান আসামিরা এখনো গ্রেফতার না হয়নি। ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্রটিও উদ্ধার হয়নি। বিষয়গুলো আমরা ডিআইজিকে অবহিত করেছি। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামিদের আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

 

চট্টগ্রামের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবহিত হয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশি¬ষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছি।

 

স্মারকলিপি প্রদানের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেল খান, সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটো, সাংগঠনিক সম্পাদক মহরম হোসাইন, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সরওয়ার কামাল, নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন দুলাল, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ব্যুরো প্রধান সামছুদ্দিন ইলিয়াস প্রমুখ।

 

এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর সকালে রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইট ভাটার সংবাদ সংগ্রহের সময় এবিসি ইটভাটার ছবি তোলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহনসহ ৫-৬ জন পিস্তল ঠেকিয়ে সাংবাদিক আবু আজাদকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে তার কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে বেঁধে রেখে তাকে নির্যাতন করে।

 

পরে এবিসি ইটভাটার মালিক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে এবং মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড- সব কেড়ে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরদিন ২৬ ডিসেম্বর রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় হতায় চেষ্টা, অপহরণ, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া, মারধর এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু আজাদ।

 

মামলায় ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন , চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী, ইটভাটার ম্যানেজার কামরান, মোহনের সহযোগী কাঞ্চন তুড়ির নাম উলে¬খ করার পাশাপাশি অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে অভিযুক্ত করা হয়। ওইদিন রাতেই আসামি কাঞ্চন তুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

একদিনের রিমান্ড শেষে আসামি কাঞ্চন তুড়ি বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ৩ জানুয়ারি বাকি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন। পরদিন এলাকায় এসে শোাউন দিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তারা।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version