-->
উপনির্বাচন

বগুড়ার দুটি আসনে প্রার্থীদের কার কত সম্পদ

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া
বগুড়ার দুটি আসনে প্রার্থীদের কার কত সম্পদ

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া: জাতীয় সংসদের বগুড়ার দুটি আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম চার বছরের ব্যবধানে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। আগে সম্পদ বলতে তেমন কিছু না থাকলেও এখন তার ব্যাংকে রয়েছে ৫৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, প্রাইভেট কার, কৃষিজমি। স্ত্রীর নামে আছে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার।

 

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা এক শতাংশ ভোটারের তালিকা সঠিক না থাকা, ঋণখেলাপিসহ নানা অসঙ্গতি থাকায় রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম রোববার দুটি আসন থেকে উপনির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের দাখিল করা মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন।

 

বগুড়ায় দুটি আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থীদের দাখিল করা হলফনামায় দেখা যায়, আলোচিত হিরো আলম স্বশিক্ষিত। ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা, কৃষিজমি থেকে আয় ছয় হাজার টাকা। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৫৫ লাখ টাকার। একটি প্রাইভেটকার ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার আছে তার। ৫১ শতক কৃষিজমি ও ৯ শতক অকৃষি জমির মালিক তিনি। আর নগদ অর্থ রয়েছে ৩০ হাজার টাকা।

 

হিরো আলম একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন তাতে ৫৫ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রের হিসাব ছিল না। সে সময়ও একই পরিমাণ বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন। উপনির্বাচনে বার্ষিক আয় ব্যবসা খাত থেকে দেখানো হলেও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আয় দেখান অভিনয় খাত থেকে। ওই সময় ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার টিভি, ফ্রিজ আসবাবপত্রের কথা উল্লেখ করেছিলেন হলফনামায়। এবারের দাখিল করা হলফনামায় তা উল্লেখ করেননি।

 

হিরো আলম ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন।

 

আয় সম্পর্কে জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, আমার কোনো কালো টাকা নেই। হলফনামায় সম্পদের যে তথ্য দিয়েছি, সবই সৎভাবে উপার্জিত। কোনো অসৎ রোজগারের অর্থ আমার নেই।

 

তিনি আরো বলেন, ইউটিউব চ্যানেল থেকেই তার বার্ষিক আয় প্রায় পনেরো লাখ টাকা।

 

এদিকে দুটি আসনে ২১ জন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করা বগুড়া-৬ আসনের জাসদের প্রার্থীর ইমদাদুল হক ইমদাদের বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন এক কোটি ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭৩৬ টাকা। ব্যাংকে রক্ষিত টাকা থেকে মুনাফা পান ১১ হাজার ৭৫৯ টাকা। তার হাতে আছে ২ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা আছে ৬০ লাখ টাকা, ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আর ১০ ভরি স্বর্ণালংকার আছে। চারতলা বাসার মালিক তিনি। যার মূল্য দেখিয়েছেন ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে ঋণ আছে এক কোটি ৫৪ লাখ ১২ হাজার টাকা। ইমদাদুল হক ইমদাদ জানান, তার মূল আয় ঠিকাদারি ব্যবসা।

 

প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক দুই সংসদ সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে বগুড়া-৬ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমর তার হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ব্যবসা থেকে ৩ লাখ টাকা। নগদ টাকা হিসেবে ব্যাংকে জমার পরিমাণ এক কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৮৬১ টাকা। একটি পাজেরো জিপ আছে ২৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের। ৯ লাখ টাকা মূল্যের ২টি টিনসেড বাড়ি, কৃষি ও অকৃষি জমি আছে ৫৩ শতক, ব্যাংক ঋণ দেখিয়েছেন ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৬১ টাকা।

 

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেন বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৩০ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫০ টাকা। এর মধ্যে ব্যবসা থেকে আয় ২৯ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫০ টাকা, বাসা ভাড়া থেকে ৫০ হাজার, কৃষি খাত থেকে ৪০ হাজার টাকা। ৭২ লাখ টাকা মূল্যের একটি পাজেরো, ১৮ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা আছে। হাতে আছে ৫ লাখ টাকা।

 

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আলোচিত বগুড়া-৬ আসনের প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নানের ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ঋণ আছে ৮০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, একটি তিনতলা বাড়ি ছাড়াও তিনটি ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। তার মাথার ওপর ঝুলছে ১০টি মামলা। ৪৬০ শতক কৃষিজমির মালিক তিনি।

 

বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপুর বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৮ লাখ টাকা, হাতে আছে ৫০ হাজার টাকা, ৫ একর কৃষি জমির মালিক তিনি। তার ৯ একরের চা বাগান রয়েছে, ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যাংক ঋণ রয়েছে তার। এ ছাড়া রয়েছে তার ৯তলা নির্মাণাধীন বাসা।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version