-->

জমি নিয়ে বিরোধ, কাটা পড়ল সহস্রাধিক ফলদ গাছ

জমি নিয়ে বিরোধ, কাটা পড়ল সহস্রাধিক ফলদ গাছ
 জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বরগুনায় একটি বাড়িতে এই গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বরগুনায় এক হাজারেরও বেশি ফলদ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ও শনিবার সকালে সদর উপজেলার বরগুনা সদর ইউনিয়নের হেউলীবুনিয়া এলাকায় ইহান পল্লি নামের এক বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

 

ক্রয়সূত্রে জমির মালিক আরিফ খান জানান, গত শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু করে শনিবার সকাল পর্যন্ত এসব গাছ কেটে ফেলা হয়। স্থানীয় রহিম মিয়া ও আবু জাফরের কাছ থেকে দুই একর ২০ শতাংশ জমি সাফ কবলা ক্রয় করে এক একরের বেশি জমিতে ইহান পল্লি নামের একটি খামার গড়ে তোলেন। পল্লির ভেতরে পুকুর খনন করে চারপাশ ঘিরে দেশীয় ফলদ গাছ রোপণ করেন তিনি। জমি কেনার তিন বছর পর স্থানীয় জাফর হোসেন নামের এক ব্যক্তি জমি দাবি করে বিক্রেতা আবদুর রহিম ও আবু জাফরকে বিবাদী করে বরগুনা আদালতে পরপর দুটি মামলা করেছিলেন। কিন্তু আদালত দুটি মামলা খারিজ করে দেন। মামলায় হারার পর বাদী মো. জাফর হোসেন বিবাদীদের সঙ্গে আপস মীমাংসা করে ইহান পল্লির দেখভাল করার দায়িত্ব নেন।

 

তিনি জানান, গত বছরের মার্চ মাসের দিকে মো. জাফর গোপনে তার চাচাতো ভাই মো. জাকির হোসেনকে বাদী করে ফের বরগুনা আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় ১ থেকে ১৭ নম্বর পর্যন্ত বিবাদী তারা নিজেরাই। মাত্র ১১ মাসে আদালত মামলার বাদী জাকির হোসেনের পক্ষে একতরফা রায় দেন। আদালতের রায় পাওয়ার পর শুক্রবার বিকেলে জাফর, জাকির, হারুন, শাহ আলম ও তার ছেলে সানি ইহান পল্লির ভেতরের এক হাজারেরও বেশি গাছ কেটে ফেলেন।

 

আরিফ খান বলেন, আদালত এক তরফা রায় দেয়ার খবর জেনে আমরা আপিল করেছি। আজ রোববার আপিলের শুনানি হবে। আপিলে তাদের রায় টিকবে না জেনেই এভাবে আমার রোপণ করা ফলদ গাছগুলো কেটে ফেলেছে প্রতিপক্ষ।

 

তিনি বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে আম, জাম, আমলকি, জলপাই, কামরাঙা, চালতাসহ কয়েক হাজার দেশীয় ফলদ গাছ রোপণ করেছিলাম। আমার সেই গাছ কেটে ফেলা মানে আমাকেই হত্যা করা হয়েছে। রায় পেয়েছে শুনে আমি বিবাদীদের অনুরোধ করেছিলাম, জমি যদি পেয়ে থাকে আপনারাই গাছ ভোগদখল করেন, আমার কোনো দাবি নেই। কিন্তু নির্মমভাবে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা আদালতে আপিল করেছি। আজ রোববার শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। শুনানির পর আমরা ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নেব।

 

মামলার বাদী জাকির হোসেন বলেন, আমরা আদালতের রায় পেয়েছি। আদালত লাল নিশান পুঁতে জমি বুঝিয়ে দিয়েছেন। গাছ কেটে ফেলার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনার বিষয়টি আদালতের কাছে জানতে চান।’

 

বরগুনা সদর থানার ওসি আলী আহম্মেদ বলেন, যেহেতু বিষয়টি আদালতের আদেশ, এখানে আমাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে সেখানে যদি ফৌজদারি কোনো অপরাধ সংঘঠিত হয়ে থাকে তবে কোনো পক্ষ চাইলে আইনি প্রতিকারের জন্য থানায় আসতে পারেন। আমরা তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।

 

ভোরের আকাশ/মি/আসা

মন্তব্য

Beta version