-->

জয়পুরহাটে জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বাজার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটে জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বাজার
জয়পুরহাটে পুরোনো কাপড়ের দোকানে শীতের কাপড় কিনতে ক্রেতাদের ভিড়। ছবিটি সোমবার তোলা

শীত পড়তে শুরু করেছে। উত্তরাঞ্চলের জেলা জয়পুরহাটে কুয়াশা পড়ছে। সকালের সূর্যকে কুয়াশার চাদরে ঢেকে রেখেছে। শীতের আমেজ দেখা দিয়েছে এ জেলায়। সকাল কিংবা সন্ধ্যার পর থেকেই একটু করে শীত অনুভূত  হচ্ছে। এদিকে শীতকে সামনে রেখে জেলায় জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বাজার।

 

শীতের আগমনে জয়পুরহাটের বসুন্ধরা মার্কেটে পুরোনো কাপড় বিক্রেতারা তালে তাল মিলিয়ে হাঁকডাক দেন ‘দেইখ্যা লন, বাইছ্যা লন, একদাম, পাঁচ টাকা, দশ টাকা, পঞ্চাশ টাকা, একশ, দেড়শ টাকা, একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি।’ এভাবেই শীতের কাপড় বিক্রি করছেন।

 

শীতকে সামনে রেখে এখন গরম পোশাক কেনা হরদম চলছে। পা থেকে মাথা পর্যন্ত শীত নিবারণ করতে গরম কাপড় কেনায় ব্যস্ত মানুষ। উচ্চ আয়ের মানুষেরা বিভিন্ন নামিদামি শপিংমল থেকে বিভিন্ন রকমের গরম কাপড় কিনতে পারলেও জয়পুরহাটের নিন্ম আয়ের মানুষের একমাত্র বসুন্ধরা মার্কেট অর্থাৎ হকারদের বিক্রি করা পুরোনো গরম কাপড়। রেল গেটের পাশে পুরোনো কাপড়ের মার্কেট হিসেবে পরিচিত।

 

তীব্র শীত আসতে এখনো কিছু সময় বাকি। তবে ইতোমধ্যেই জমে উঠেছে গরিবের শীতের মার্কেট। এ মার্কেটে ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও চলছে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এখানে মূলত নিন্ম আয়ের লোকজন কাপড় কিনে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে উচ্চ আয় ও মাঝারি আয়ের লোকজনেরাও এখান থেকে কাপড় কিনছেন। এখানকার ব্যবসায়ীরা শুধু শীতকে সামনে রেখে কাপড় কেনাবেচা করে থাকেন।

 

বছরের অন্যান্য সময় এখানে তেমন কেনাবেচা না হলেও শীতকে সামনে রেখে এখানকার ব্যবসা জমজমাট হয়। এতেই ব্যবসায়ীরা ভালো লাভবান হয়ে থাকে।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার এই পুরোনো কাপড়ের মার্কেটে নানা বয়সি মানুষের ভিড় রয়েছে। বিক্রেতারা ক্রেতা দেখলেই করছেন হাঁকডাক। সস্তায় নিয়ে যান গরম কাপড় আরো কত কি! এ মার্কেটে ৫ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্তও শীতের কাপড় পাওয়া যায়।

 

ক্রেতা মিজান রহমান বলেন, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি। পরিবারের জন্য কিছু কাপড় কিনতে এসেছি। দাম বেশি হওয়ার কারণে কয়েকটা দোকানে ঘুরে ঘুরে দেখতে হচ্ছে।

 

ক্রেতা গৃহিণী নূরবানু বলেন, আমরা গরিব মানুষ, দিনে আনি দিন খাই। অভাবের সংসার তাই সন্তানের জন্য পুরোনো কাপড় কিনতে এসেছি। কম দামে কয়েকটা কিনেছি। আরো কয়েকটা কিনব।

 

মার্কেটের পুরোনো কাপড় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার দোকানে সর্বনিন্ম ৫০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা দামের কাপড় আছে। ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো কাপড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ৪০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা বিক্রি হয়। এতে আমার সংসার ভালোই চলছে।

 

বিক্রেতা বাবু ইসলাম বলেন, আমি ২০ বছর ধরে এই রেললাইনের ধারে পুরোনো কাপড় বিক্রি করি। প্রতি কাপড় ২০ টাকা দরে বিক্রি করি। দিনে ২০০০ টাকা বিক্রি করতে পারি। আর একটু শীত বেশি হলে আরো বেশি বিক্রি করতে পারব।

 

জেলা হকার্স কমিটির সভাপতি মো. নবীন ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় প্রতিটি বেল্টে তাদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত টাকা দেয়ার পরও তাদের কিনতে হচ্ছে নিন্মমানের বেল্ট। যা বিক্রি করে মুলধন আর যাতায়াতের খরচই উঠানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version