-->

শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা
জয়পুরহাটে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর। ছবিটি রোববার তোলা

কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে সকালের সূর্য। সন্ধ্যা নামলেই অনুভূত হচ্ছে শীত। পাতলা কাঁথা মানছে না শীত। তাই হিমেল ঠান্ডায় থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন লেপের উষ্ণতা। শীতের তীব্রতা বাড়ার আগামবার্তার সঙ্গে তুলা ছাঁটাই ও লেপ-তোষক তৈরির জন্য কর্মচঞ্চলতা বেড়েছে ধুনারিদের মাঝে। সারাদেশের মতো উত্তরের জেলা জয়পুরহাটে বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া।

 

জেলার প্রায় শতাধিক লেপ-তোষক তৈরির দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন ধুনকররা। শীতের আগমন উপলক্ষ করে দোকানগুলোতে লেপ-তোষক বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। হিমেল ঠান্ডায় শরীর সতেজ রাখার জন্য বিশেষ করে লেপের চাহিদা বেড়ে যায়।

 

শীতের প্রচÐ ঠান্ডায় হাঁড়কাঁপানো পরিস্থিতি রাতের নিদ্রায় একটু আরামের জন্য লেপের উষ্ণতা প্রশান্তি এনে দেয়। তাই তো বেড়েছে লেপ-তোষক তৈরির ধুনকরদের ব্যস্ততা। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ লেপ-তোষক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে জেলার হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাটে।

 

হিমেল শীতের পরশ থেকে উষ্ণতা পেতে কেউ পুরোনো লেপ-তোষক-বালিশ ঠিকঠাক করছেন। আবার কেউ নতুন তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। অন্যদিকে অনেকে উঠিয়ে রাখা লেপ-তোষক বের করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।

 

জেলার বিভিন্ন বেডিং আর কটন শোপ দোকানগুলোতে গিয়ে তাদের কর্মব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। কারিগররা কেউ তুলা ধুনছেন, কেউ ব্যস্ত লেপ-তোষক সেলাইয়ের কাজে, কেউ বা লেপে হরেকরকম ডিজাইন ফুটিয়ে তুলছেন। শীত মৌসুমেই তাদের সারা বছরের ব্যবসায়িক হিসাব মেলাতে হয়।

 

জানা যায়, বর্তমানে বাজারে শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

গত বছরের তুলনায় তুলার দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে। প্রতিপিস লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হচ্ছে ১২০০ থেকে দুই হাজার টাকা। তোষক বানাতে ১৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়।

 

তবে বিভিন্ন রকমের দামি-কমদামি তুলার প্রকারভেদে লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। কারিগর রাসেল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন ৪ থেকে ৫টি লেপ তৈরি করতে পারি। এতে দিনে ৬০০ টাকা ইনকাম হয়, যা দিয়ে আমাদের ৪ সদস্যের সংসার ভালোই চলে।

 

নতুনহাট এলাকার ক্রেতা আরজুমান বানু বলেন, শীতের তীব্রতা বেড়েছে, তাই এখন আর পাতলা কাঁথায় শীত মানছে না। তাই পুরোনো লেপ নতুন করে তৈরি করতে এসেছি। কাপড় ও তুলার দাম বাড়ার কারণে খরচ বেশি লাগছে।

 

লেপ কিনতে আসা মাহফুজা আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, পরিবারের সদস্যদের জন্য ২টি লেপ কিনলাম। তাতে খরচ পড়ল ৪০০০ টাকা। গত বছর লেপপ্রতি ১০০০ টাকায় কিনেছিলাম কিন্তু এবার বেশি লেগেছে।

 

পৌর শহরের বৈরাগী মোড় বাজারের লেপ-তোষক ব্যবসায়ী ওয়াহেদ আলী বলেন, শীতের আগমনে ক্রেতারা নতুন লেপ-তোষক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক মানুষ আগেভাগে পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক ও নতুনভাবে তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। প্রতিদিন ২০০০ টাকার মতো লেপ-তোষক বিক্রি হয়। এ বছর কাপড় ও তুলার দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে লেপ-তোষকের দাম বেড়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষকের চাহিদা আরও বাড়বে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version