-->

ফুলবাড়ী সাব-রেজিস্ট্রার অফিস : অতিরিক্ত টাকা ছাড়া হয় না দলিল রেজিস্ট্রি

দিনাজপুর প্রতিনিধি
ফুলবাড়ী সাব-রেজিস্ট্রার অফিস : অতিরিক্ত টাকা ছাড়া হয় না দলিল রেজিস্ট্রি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া হয় না দলিল রেজিস্ট্র্রি। দলিলের সার্টিফাইট কপি তুলতেও খরচ করতে হয় দ্বিগুণ টাকা। কয়েকটি দলিল বাজার মূল্যের থেকেও কম মূল্যে রেজিস্ট্রি করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করার অভিযোগ উঠেছে সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে।

 

এদিকে সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করায় মনছুর আলী মÐল, সামসুল হক মÐল ও মোস্তাহারুল ইসলাম রিপন নামে তিনজন দলিল লেখককে সাময়িক সাসপেন্ড করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সাব-রেজিস্ট্রার। এ নিয়ে দলিল লেখকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

ফুলবাড়ী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল রেজিস্ট্র্রি করতে আসা কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, সরকারি নির্ধারিত মূল্যের ফিস-স্টাম্প ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে না।তারা বলেন, একটি দলিলের মূল্য অনুযায়ী সরকারি খরচের চেয়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া দলিলের সার্টিফিকেট কপি তুলতে সরকারিভাবে ৭০০ টাকা হলেও, সেখানে দিতে হচ্ছে ১৩শ থেকে ১৪শ টাকা।

 

কয়েকজন দলিল লেখক অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান কর্মরত খÐকালীন সাব-রেজিস্ট্র্রার রিপন চন্দ্র মÐল অতিরিক্ত টাকা ছাড়া দলিল রেজিস্ট্র্রি করেন না। এ কারণে তারা তাদের গ্রাহকদের কাছে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে সাব-রেজিস্ট্রারকে সাময়িক সাসপেন্ড করাসহ দলিল লেখক সনদ বাতিল করার হুমকি দিচ্ছে, এতে করে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

 

দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনছুর আলী মÐল জানান, তিনিসহ দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি সামসুল হক মÐল ও দলিল লেখক মোস্তাহারুল ইসলাম রিপন সাব-রেজিস্ট্রারের নানা অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকের কাছে উত্থাপন করেন। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে তাদের তিনজনকে সাময়িক সাসপেন্ড করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মÐল বলেন, অফিসের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও একজন অফিস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর দায়ে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

 

এদিকে সাব-রেজিস্ট্র্রারের অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি সালে ৪৫৫৭নং দলিলে উপজেলার দক্ষিণ বাসুদেবপুর মৌজার ১৬২নং দাগে সাড়ে তিন শতক জমি মাত্র ৫ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রি হয়েছে, অথচ ওই দাগে সাত শতক জমি ২০২০ সালের ২৪০০নং দলিলে ২৭ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রি হয়েছিল। সে অনুযায়ী, সাড়ে তিন শতক জমির মূল্য হয় ১৪ লাখ টাকা হয়, কিন্তু মাত্র পাঁচ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রি হওয়ায় সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব্য ঘাটতির ঘটনা ঘটেছে।

 

একই ঘটনা ঘটেছে আরো কয়েকটি দলিলে, যেখানে বর্তমানে বাস্তুভিটা হিসেবে রূপান্তরিত হওয়া জমিও ডাঙ্গা বা দলা শ্রেণিতে রেজিস্ট্রি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।তবে সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মÐল বলছেন, জমির বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন ঘটলেও রেকর্ডিও শ্রেণির পরিবর্তন ঘটেনি। তিনি বলেন, রেকর্ডিও শ্রেণিতে মূল্য কম থাকায় তিনি কম দামে রেজিস্ট্রি করেছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি

মন্তব্য

Beta version