-->

মজুত আলু নিয়ে বিপাকে চাষিরা

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মজুত আলু নিয়ে বিপাকে চাষিরা
ফাইল ছবি

মুন্সীগঞ্জ :মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে গত মৌসুমে ১০টি হিমাগারে রাখা প্রায় ৫৫ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ বস্তা আলু এখনো অবিক্রীত রয়ে গেছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন এ অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার চাষি ও মজুতকারী।

 

গত মৌসুমে বৃষ্টির কারণে দুই দফায় আলুর বীজ বপন করতে হয়েছে কৃষকদের। এতে উৎপাদন খরচ হয়েছে অনেক বেশি। এ খরচ পুষিয়ে নিতে অনেক কৃষক হিমাগারগুলোতে আলু মজুত করেছিলেন। কিন্তু আলুর দাম পাইকারি বাজারে তেমন বাড়েনি। এতে উপজেলার ১০টি হিমাগারে সংরক্ষিত আলু নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

 

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলু উৎপাদন করতে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ব্যয় হয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা দরে। এতে বস্তাপ্রতি লোকসান হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ১০টি হিমাগারে ৫৫ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ বস্তা আলু মজুত রয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ আলু বিক্রি না হওয়ায় চাষিদের ক্ষতি প্রায় ২২ কোটি টাকা।

 

সিরাজদিখান কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে এ উপজেলায় ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। উৎপাদন হয় ২ লাখ ৮০ হাজার টন। বেশি দামের আশায় কৃষক বেশিরভাগ আলু হিমাগারে মজুত করেছিলেন।

 

বয়রাগাদী এলাকার চাষি মো. ইব্রাহীম বলেন, আলু নিয়ে খুব বিপাকে আছি। গত বছর হঠাৎ বৃষ্টির কারণে দু’বার আলু বপন করতে হয়েছে। এ বছর হিমাগারে ৯ হাজার বস্তা আলু মজুত রাখি। এখনো চার হাজার বস্তা অবিক্রীত পড়ে আছে। হিমাগারের খরচসহ প্রতি বস্তায় ৪০০ টাকার মতো লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ বছর আমার ২০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হচ্ছে।

 

সম্রাট কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের কোল্ডস্টোরেজের ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৯০ হাজার বস্তা। এ পর্যন্ত মাত্র ৬১ হাজার বস্তা আলু বিক্রি হয়েছে। এখনো ১ লাখ ৩৫ হাজার বস্তা রয়ে গেছে।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু সাইদ শুভ্র বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় আলু চাষ হয়। সিরাজদিখানে চাহিদার তুলনায় আলু উৎপাদন বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা আলুর দাম পাচ্ছেন না। এ অঞ্চলের চাষিদের প্রতি পরামর্শ হলো- তাঁরা যেন আলুর পরিবর্তে সরিষা ও ভুট্টা চাষ করেন; তাহলে তেলের ঘাটতিও কিছুটা কমে যাবে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version