-->

দুদকের পরিচয়ে চাঁদা দাবি, দুই সাংবাদিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
দুদকের পরিচয়ে চাঁদা দাবি, দুই সাংবাদিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুর : দুদকের কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদা দাবি ও ভয়ভীতি দেখানোর অপরাধে শরীয়তপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২ সাংবাদিকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক আওয়ামী লীগ নেতা। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সখিপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

 

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বাংলা রিপোর্ট পত্রিকার প্রতিনিধি চাঁদপুর জেলার মতলব থানাধীন মল্লিক বাড়ির ইদ্রিস খান ও শরীয়তপুর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বালুচর পত্রিকার সম্পাদক এমএ ওয়াদুদ মিয়া গত ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় সখিপুর থানার চরসেনসাস বেড়াচাক্কি ছালি ফ্যাক্টরির সামনে ট্রলার ঘাটে গিয়ে সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিতু বেপারীকে খোঁজাখুঁজি করেন।

 

এক পর্যায়ে তাকে না পেয়ে তার নিজস্ব লোক জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে তার মোবাইল নম্বর নিয়ে ফোন করে নানা ধরনের প্রশ্ন করেন। সাংবাদিক ইদ্রিস খান ও ওয়াদুদ দুজনেই নিজেদেরকে দুদকের কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। তারা জিতু বেপারীর সখিপুর ও চাঁদপুরের সব জমিজমা ও বাড়িঘরসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার উৎস জানতে চায়।

 

এ সময় কথিত দুদকের কর্মকর্তাগণ জিতু বেপারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, অবৈধভাবে দুর্নীতি করে সম্পত্তি করেছেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হয় ২০ লাখ টাকা দিবেন না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ সময় ওই দদুক পরিচয়দানকারীরা তাদের মোবাইল নম্বর সরবরাহ দিয়ে বলে ওই নম্বরে যেন ঢাকায় যোগাযোগ করে দেখা করেন।

 

গত ১৭ সেপ্টেম্বর জিতু বেপারী ঢাকায় দুদক অফিসে গিয়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে তার মুঠোফোনে ফোন করেন। এ সময় ইদ্রিস খান মগবাজার চৌরাস্তায় যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পরে ইদ্রিস খান জিতু বেপারীকে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান। এক পর্যায়ে জিতু বেপারী তাকে তার পরিচয় কার্ড দেখাতে চাইলে ইদ্রিস জানান, তিনি এনটিভির ক্রাইম রিপোর্টার। এ সময় ভিজিডিং কার্ড চাইলে বলেন সাথে কার্ড নেই।

 

এ সময় জিতু বেপারীকে বলেন, আপনার বিরুদ্ধে এনটিভিতে নিউজ করলে অনেক ক্ষতি হবে। আমাদেরকে ২০ লাখ টাকা দিয়েন তাহলে কোনো নিউজ করব না।

 

জিতু বেপারীর মনে সন্দেহ জাগলে তিনি ইদ্রিসকে বলেন, আপনি যদি নিউজ করতে চান শরীয়তপুর ও চাঁদপুরের সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করে আমার সম্পর্কে জেনে ভালো করে তদন্ত করে সত্য কথা লিখেন। তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। এ কথা বলে চলে আসেন।

 

এরপর গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলা রিপোর্ট নামে একটি অনলাইন পত্রিকায় ‘মাছ বিক্রেতা থেকে কোটিপতি’ শিরোনামে জিতু বেপারীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে একটি সংবাদ প্রচার করেন। একই শিরোনামে সাপ্তাহিক বালুচর পত্রিকায় হুবহু ওই নিউজ করে। এ সংবাদে জিতু বেপারীর মানসম্মান ক্ষুণ্ন্ন হয়েছে বিধায় গতকাল রোববার শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিজে বাদী হয়ে কথিত সাংবাদিক ইদ্রিস খান ও এমএ ওয়াদুদ মিয়াসহ বেড়াচাক্কির আরও চারজনসহ ছয়জনকে আসামি করে ৩৮৫/৫০৬(।।)/১০৯ ধারায় একটি অভিযোগ করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে সখিপুর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন।

 

এ ব্যাপারে সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চরসেনসাস ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলুর বাজার ফেরিঘাটের ইজারাদার জিতু বেপারী বলেন, দুদকের কর্মকর্তা পরিচয়ে স্থানীয় চার ব্যক্তির সহায়তায় কথিত দুই সাংবাদিক আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। আমি টাকা না দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে দুটি অনলাইন পত্রিকায় নিউজ করে মানহানি করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

 

ভোরের আকাশ/জেএস/

মন্তব্য

Beta version