সপ্তম শ্রেণির ছাত্র হাসান হাওলাদার ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে নিজ বাড়ির বাগানের কড়ই গাছের গর্ত (গুহা) থেকে আরো তিন বন্ধুদের নিয়ে চারটি শালিকের ছানা সংগ্রহ করে। চারজনে চারটি ভাগ করে নেয়।
কলা, আম, কাঁঠাল ও মুরগির ফিড কিনে তা থেকে পরিমিত খাবার দিয়ে পরম যত্নে লালন-পালন করতে থাকে। পাখির সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে থাকে পরিবারের সবাই।
হাসানের ছোট বোন তাসমিয়া পাখির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। সেই পাখির সঙ্গে ছোট ছোট শব্দ বিনিময় করে শেখানো হয় কথা বলার কৌশল। শালিক পাখিটিও কথা বলার কৌশল ধীরে ধীরে আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়। এখন সে ছোট ছোট সহজ বাক্য অনায়াসেই উচ্চারণ করতে পারে।
বর্তমানে এই শালিক পাখিটি তিন বছর অতিক্রম করে চার বছরে পা রেখেছে। এখন সে শুধু পরিবারের গণ্ডির মধ্যেই প্রিয় পাখি নয়, এলাকাবাসীর সবার কাছেই রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা ও ভালোবাসা।
ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার উত্তর নাকিলে বাড়িয়া গ্রামে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সিদ্দিক হোসেনের ঘরে শালিকটিকে অতি স্নেহে লালন-পালন করছে তার স্কুলপড়ুয়া ছেলে ও মেয়ে। সিদ্দিক হোসেনের চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ও একমাত্র ছেলে হাসান। সে শুক্তাগড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র।
হাসান জানায়, শিশুকাল থেকে পাখির প্রতি অগাধ ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার প্রকাশ থেকেই শালিক পাখির বাসা খুঁজে বের করে ছানা নামিয়ে আনা। চার বন্ধু মিলে একটি বাসা থেকেই চারটি ছানা নামিয়ে আনে।
অন্য তিনটিকে বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়ানোর ফলে আর বাঁচিয়ে রাখতে পারেনি। আমার নেওয়া শালিক পাখির ছানাটিকে কলা, আম, কাঁঠাল, লিচু ও মুরগির ফিড পরিমাণমতো খাবার খাইয়ে বড় করা হয়।
সে আমাদের পোষ মানে। কখনো খাঁচায় আবার কখনো মুক্তভাবে পালন করা হয়। ছেড়ে দিলে কখনোই তাকে খুঁজে বের করতে হয়নি। কিছুক্ষণ পর তার আবাসস্থলে ফিরে আসে। এভাবেই তার জীবনচক্র চলা শুরু হয়।
তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে প্রথমত ছোট ছোট শব্দ আয়ত্ত করে। এখন সে পরিচিত মানুষ দেখলে নিজ ইচ্ছায় অনেক কথা বলে। ‘আম্মা কি করো, ভাত খাইছো, তোমার কী, ও টিটু’ এসব কথাসহ আরো অনেক বাক্য অনায়াসেই উচ্চারণ করতে পারে।
মন্তব্য