-->

ইকোপার্ক হবে কল্যাণপুর জলাধারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইকোপার্ক হবে কল্যাণপুর জলাধারে

ইকোপার্ক হবে কল্যাণপুর জলাধারে। এতে যেমন সৌন্দর্য বাড়বে, তেমনি দূর হবে জলাবদ্ধতা। ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুর, কল্যাণপুর, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিয়মিত ঘটনা।

 

এসব এলাকার পানি গিয়ে জমা হয় কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ডে (জলাধার)। সেখানে ‘হাইড্রো ইকোপার্ক’ নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এরই মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদও সম্পন্ন। এখন মাটি খনন ও ইকোপার্কের নকশা তৈরির কাজ চলছে। পুরো কাজ শেষ হলে এসব এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে দাবি মেয়র আতিকুল ইসলামের।

 

ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ডের (জলাধার) আয়তন প্রায় ৫৩ একর। কয়েক যুগ ধরে এ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বসতি গড়ে তুলেছিল একটি চক্র।

 

সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন সে জায়গায় চলছে হাইড্রো ইকোপার্ক নির্মাণের প্রস্তুতি।

 

কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড ঘুরে দেখা যায়, জলাধারের চারপাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থাপনার ভাঙা অংশ পড়ে রয়েছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। জলাধার অংশ ময়লা-আবর্জনায় ভরা। আলাদা তিনটি ভেকু দিয়ে তা পরিষ্কার করছেন ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।

 

তবে এভাবে পুরো জলাধার খনন করতে কতদিন সময় লাগতে পারে বা কী পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা এবং মাটি সেখান থেকে অপসারণ করা হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি তারা।

 

তবে ডিএনসিসির প্রকৌশল দপ্তরের তথ্যমতে, গত ১৩ মে পর্যন্ত এই জলাধার থেকে ৩০ লাখ ঘনফুট মাটি ও বর্জ্য অপসারণ করেছে সংস্থাটি।

 

এদিকে যারা রিটেনশন পন্ডের জায়গায় বসতি গড়ে তুলেছিলেন, তারা সিটি করপোরেশনের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইছেন।

 

তাদের দাবি, পৈতৃক এবং ক্রয়সূত্রে তারা ওই জায়গার মালিক। সিটি করপোরেশন তাদের অবৈধভাবে উচ্ছেদ করেছে। করপোরেশনের জমি দরকার হলে বর্তমান বাজারদরে অধিগ্রহণ করে নিতে হবে।

 

গাবতলীর গৈদারটেক এলাকায় বেড়িবাঁধ লাগোয়া এ জলাধার কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড এলাকা হিসেবে পরিচিত। মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মিরপুর, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার বৃষ্টির পানি এসে এ জলাধারে (রিটেনশন পন্ডে) জমা হয়। পরে জলাধার থেকে পানি পাম্পের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়। দুই বছর আগে এ জলাধারের মালিকানা ডিএনসিসিকে হস্তান্তর করেছে ঢাকা ওয়াসা।

 

এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, কল্যাণপুর জলাধার ঘিরে একটি বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করা যেতে পারে এটি কেউ আগে চিন্তাও করতে পারেনি। এখন পার্ক তৈরির জন্য রিটেনশন পন্ডে খনন কাজ চলছে। এটা করতে গিয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কিন্তু কোনো বাধাই আমাদের কাজ বন্ধ করতে পারবে না।

 

তিনি বলেন, এই ইকোপার্ক সব বয়সের মানুষের জন্য করা হবে। শিশু, নারী, পুরুষ ও বয়স্কদের সব সুবিধা সেখানে থাকবে। আমরা জলাশয়টি ঘিরে সিটি রেস্ট গড়ে তুলব। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা শহরে হাতিরঝিল প্রকল্প করে দিয়েছেন। কল্যাণপুরে আমরা তেমনি প্রকৃতিনির্ভর ইকোপার্ক নির্মাণ করব।

 

অন্যদিকে ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ সূত্র জানায়, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও সৌন্দর্য বাড়াতে ২০২০ সালে ১৩টি খাল, জলাশয় ডিএনসিসিকে হাস্তান্তর করে ঢাকা ওয়াসা। পরে এসব খাল থেকে প্রাথমিকভাবে ময়লা-আবর্জনা, অবৈধ স্থাপনা অপসারণ শুরু করে ডিএনসিসি।

 

তারই অংশ হিসেবে চলতি বছরের শুরুর দিকে ৫৩ একর আয়তনের কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। তখনই জমির মালিকানা দাবি করেন দখলদাররা। এ দাবিতে গত ১০ মে মানববন্ধনও করেন তারা।

 

অধিগ্রহণ জটিলতা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা ওয়াসা জলাশয়ের এই জমি অধিগ্রহণ করেছে ১৯৮৯ সালে। তখন ডিসি অফিস থেকে জমির মালিকদের টাকা দেওয়া হয়েছে। যারা টাকা নিয়েছেন তারাই আবার এখানের জায়গা দখল করে রেখেছিলেন। এখন তাদের আর ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version