-->

চিরচেনারূপে ফেরেনি রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক
চিরচেনারূপে ফেরেনি রাজধানী

চিরচেনারূপে ফেরেনি রাজধানী ঢাকা। ঈদের পঞ্চম দিনেও অনেকটা ফাঁকা নগরীর রাস্তাঘাট ও অলিগলি। নেই যানবাহনের চাপ। বন্ধ রয়েছে অনেক দোকানপাট। যানজটমুক্ত নগরীর প্রকৃত সৌন্দর্য যেন ফুটে উঠেছে। কার পার্কিং না থাকায় দৃশ্যমান হয়েছে সড়কগুলোর প্রকৃত প্রশস্ততা। তবে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে গ্রামে ঈদ করতে যাওয়া মানুষ। ফলে চাপ বেড়েছে লঞ্চঘাট ও বাস টার্মিনালগুলোতে। বুধবার সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

 

গত ২২ এপ্রিল ছিল পবিত্র ঈদুল ফিতর। সোমবার থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, মার্কেট, বিপণিবিতান খোলা হয়। কিন্তু ঈদ শেষে এখনো গ্রাম থেকে সবার ঢাকায় ফেরা হয়নি। অনেকেই বাড়তি ছুটি নিয়ে ঈদের চতুর্থ-পঞ্চম দিনে ঢাকায় ফিরছেন। ফলে এখনো নগরের রাস্তাঘাটও অনেকটাই ফাঁকা।

 

বুধবার গাজীপুর-গুলিস্তান পরিবহনে মগবাজার ওয়্যারলেস গেট বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কি মোড়ে পৌঁছতে সময় লেগেছে মাত্র ৭ মিনিট। মগবাজারবাসী মো. সাইফুল ভোরের আকাশকে বলেন, বিজয়নগর পানি ট্যাঙ্কির কাছে আমার অফিস। প্রতিদিন বাসে করে যাওয়া-আসা করি। এটুকু পথ যেতে ৩০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগে। গত কয়েকদিন ধরে পরিবহনে চড়ে খুব প্রশান্তি পাচ্ছি। গত মঙ্গলবার সময় লেগেছে মাত্র ৭ মিনিট। যানজট তো দূরের কথা, রাস্তাঘাটে তেমন লোকজন নেই বললেই চলে বলে জানান মো. সাইফুল।

 

পাশে দাঁড়ানো ভাড়ায় বাইকচালক মো. আকতার হোসেন বলেন, এই সপ্তাহজুড়ে ঈদের আমেজ থাকবে। আমি কিছুক্ষণ আগে মহাখালী থেকে সচিবালয় গেটের সামনে এক যাত্রীকে নামিয়ে দিয়েছি। সময় লেগেছে মাত্র ১২ মিনিট বলে জানান বাইকচালক। খোলেনি অনেক খাবার দোকান। পূর্ব রাজাবাজারবাসী মো. হেলাল উদ্দিন ভোরের আকাশকে জানান, সকালে নাস্তা কিনতে বহুদূর পথ হাঁটতে হয়েছে। বাসার আশপাশে একটি খাবার দোকানও খোলা পাওয়া যায়নি। পান্থপথ মোড়ে গিয়ে পরটা কিনে আনতে হয়েছে। শুধু খাবার দোকান নয়, ফুটপাতের অধিকাংশ ভাসমান চা দোকান রয়েছে বন্ধ। মগবাজার মোড়ের কাছে ওয়াকফ ভবনের সামনে খোলা রয়েছে দুটি দোকান। চা দোকানদার ফারুক ভোরের আকাশকে বলেন, অনেকেই গ্রাম থেকে ফিরে আসেনি। আমি গতকাল ফিরেছি। কম দোকান থাকায় স্বাভাবিক দিনের তুলনায় ক্রেতার চাপ বেশি দেখা যাচ্ছে।

 

বিজয়নগর কালভার্ট রোডের ১৫ তলাবিশিষ্ট প্রিতম জামান টাওয়ারের অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গতকাল বুধবারও খোলেনি। চারটি লিফটের মধ্যে চালু রয়েছে একটি। লিফটম্যান মো. সাজ্জাদ ভোরের আকাশকে বলেন, অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। লোকজনের আসা-যাওয়াও কম। কর্মদিবসে লিফটে ওঠা-নামার জন্য লোকজনের লম্বা লাইন লেগেই থাকে। কিন্তু গত কয়েকদিন বেশ শান্তিতেই আছি বলে জানান মো. সাজ্জাদ।

 

গুলিস্তান-কুড়িলগামী ভিক্টর পরিবহনের ড্রাইভার মো. আওয়াল ভোরের আকাশকে বলেন, এবার ঈদের দুদিন আগ থেকেই ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। যাত্রা সংকট চলছে। ধারণ ক্ষমতার তিন ভাগের একভাগ যাত্রী নিয়ে চলতে হচ্ছে। এমন দিনে রাস্তায় গাড়ি নামালে লোকসান গুনতে হয় বলে জানান মো. আওয়াল।

 

শাহবাগ মোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিশ সদস্য মো. ইদ্রিস মিয়া ভোরের আকাশকে বলেন, ঈদ করে লোকজন ফিরতে শুরু করেছে। তবে ফাঁকা রয়ে গেছে রাজধানী। আগামী শুক্র ও শনিবার ঢাকামুখী মানুষের চাপ হয়তো বাড়বে। আগামী রোববার থেকে ঢাকায় যানবাহনের চাপ বাড়তে পারে বলে জানান ইদ্রিস মিয়া।

 

মৌচাক মার্কেটের সামনে রিকশাচালাক মো. মজিদ মিয়া ভোরের আকাশকে বলেন, গ্রাম থেকে অধিকাংশ মানুষ এখনো ফিরে আসেনি। যাত্রী পাওয়া কষ্টের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম ভাড়ায় যাত্রী টানতে হচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version